নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ধানমন্ডিতে নজরুল ইন্সটিটিউটের পাশে একটি বাড়ির গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম ও গৃহপরিচারিকা দিতিকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
রবিবার (০৩ নভেম্বর) সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন নিহত আফরোজার কন্যা দিলরুবা সুলতানা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ বলেন, এই ঘটনায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহভাজন গৃহপরিচারিকাকে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আটকের চেষ্টা চলছে। তবে, আজ এটা নিয়ে আপডেট কিছু বলা সম্ভব নয়। আগামীকাল সোমবার এই নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা মামলার স্বার্থে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
এদিকে, ময়নাতদন্তে তাদের দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে বলে শনিবার (০২ নভেম্বর) জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. কবীর সোহেল। তিনি বলেন, নিহত দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের নেকে (গলায়) আঘাত ছিল।
এদিকে, নিহতদের ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এবং আরেক সদস্য হলেন-লেকচারার কবীর বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে ধানমন্ডি ১৫ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাসার এফ-৪ ফ্ল্যাটে গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) এবং গৃহপরিচারিকা দিতিকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ছয়তলা ভবনের ওই ফ্ল্যাটের মালিক মনির উদ্দিন তারিম নামে এক শিল্পপতি ও গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। নিহত আফরোজা বেগম সম্পর্কে সেই ব্যবসায়ীর শাশুড়ি।
নিহত আফরোজা বেগমের স্বামীর নাম হচ্ছে হিরণ শেখ। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। এই বাড়ির চার ও পাঁচতলায় তাদের দুইটি ফ্ল্যাট। ৪ তলার ফ্ল্যাটে থাকতেন আফরোজা ও গৃহকর্মী দিতি। উপরের ফ্ল্যাটে থাকতো তার মেয়ে দিলরুবা সুলতানা ও জামাতা মনির উদ্দিন তারিম।
পুলিশ জানায়, ওই ফ্ল্যাটে গৃহপরিচারিকা হিসেবে শুক্রবার বিকালে এক নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়। নতুন কাজে যোগ দিলেও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা নেয়নি গৃহকর্ত্রী আফরোজা। কারণ, তার গাড়ি চালকই সেই নারীকে কাজে আনেন। আর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাড়ির গৃহকর্ত্রী ও আরেক গৃহপরিচারিকাকে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়, বলে ধারণা পুলিশের। হত্যার পরে বাড়ি থেকে মোবাইল এবং স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু জিনিস খোয়া গেছে। ঘটনার পর বাড়ির সিসিটিভি পর্যালোচনা করে গ্রেফতারের অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বাড়ির দারোয়ান নুরুজ্জামান বলেন, শুক্রবার বিকাল ৩টায় আফরোজার জামাতা মনিরের পিএস বাচ্চু এক নারীকে নিয়ে বাসায় আসে। সেই নারী বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করবে বলে বাচ্চুর সাথে ওপরে যান। এরপর ৬টার দিকে বাচ্চু একবার লুঙ্গি পরে নিচে নামে। এর কিছুক্ষণ পরে সেই নারী চলে যায়। তারপর বাচ্চু প্যান্ট-শার্ট পরে চলে যায়। এরপর ওপর থেকে একটা ছেলে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, খালাম্মা মারা গেছে। এরপর লোকজন আসে।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল লতিফ বলেন, এই ঘটনায় বাড়িটির ইলেক্ট্রিশিয়ান বেলায়েত ও আফরোজার মেয়ের জামাতার পিএস বাচ্চুকে আটক করেছে পুলিশ।
Discussion about this post