রাজশাহী প্রতিনিধি: সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে ফেসবুকে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক কাজী জাহিদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে রাতে কাজী জাহিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে একটি মামলা করেন আইনজীবী তাপস কুমার সাহা।
বুধবার (১৭ জুন) দিনগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের আবাসিক ভবন পূর্ব-১৩ নম্বর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সকালে মতিহার থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে দুপুরের আগেই গ্রেফতার রাবি শিক্ষক কাজী জাহিদকে আদালতে পাঠানো হবে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জীবনসংকটে থাকাকালীন রাবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষক বলে পরিচিত কাজী জাহিদুর রহমান তার ফেসবুক পাতায় একাধিক পোস্ট দিয়ে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য লেখেন। দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা সম্পর্কে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হন রাজশাহীর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এমনকি শিক্ষকরাও এ প্রতিবাদে শামিল হন। জাহিদকে ক্ষমা চেয়ে তার মন্তব্য বিমোচন করারও দাবি তোলেন ও নিন্দার ঝড় প্রবল হয়ে ওঠে। এর পরও জাহিদ তার মন্তব্যে অনড় থাকলে বুধবার রাতে আইসিটি আইনে মামলাটি করেন আইনজীবী তাপস কুমার সাহা।
রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ রুনু অভিযোগে বলেন, রাবি শিক্ষক কাজী জাহিদ জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে খুবই অশালীন ভাষায় বিষোদগার করেন নিজের ফেসবুক পাতায়। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত ১৫ জুন রাবি ছাত্রলীগ ভিসি প্রফেসর এম সোবহানের কাছে স্মারকলিপি দেন।
এর আগে কাজী জাহিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, কাজী জাহিদের বাড়ি নড়াইলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকালে জাহিদকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন রাবির বর্তমান ভিসি প্রফেসর এম আবদুস সোবহান।
তবে কাজী জাহিদ নিজ জেলা নড়াইল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। ২০১৬ সালে ওই জেলা কমিটিতে তিনি ছিলেন তথ্য ও প্রচার সম্পাদক। তবে মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে উগ্র ও কুরুচিপুর্ণ অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে ১৬ জুন জাহিদকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ। এর আগেও জাহিদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন।
Discussion about this post