কূটনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, সমসাময়িক ইস্যু হিসেবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, মুক্তমতের চর্চায় বাধা, মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তা, শিক্ষক ও ব্লগার খুনসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা তুলবেন মার্কিন এই কূটনীতিক। নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপে রাখতে চাইবেন তিনি।
এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে আসেন নিশা দেশাই। বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন পেশার  প্রতিনিধিদের সঙ্গে। এরপর ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আরো দু’দফা ঢাকায় আসেন তিনি। তবে তার এবারের সফরের প্রেক্ষিত একেবারেই ভিন্ন।

যদিও এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয় একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই আছে। সমসাময়িক ইস্যুতে সুশীল সমাজের সঙ্গেও বসতে পারেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যেহেতু এরইমধ্যে জুলহাস হত্যাকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে, তাই নিশা দেশাই এর আসন্ন সফরের পুরোটা জুড়েই থাকবে সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু ও নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা।

এসব ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার ঠিক কি করতে চাইছে সে সম্পর্কেও জানতে চাইতে পারেন নিশা দেশাই। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর উদাহরণ টেনে সরকারি দলসহ দেশের সব রাজনৈতিক দলকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহবান জানাতে পারেন তিনি।

এছাড়া ২০১৯ সালের নির্বাচনও উঠে আসতে পারে নিশা দেশাই এর আলোচনায়।

সূত্রমতে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত বৃহস্পতিবার টেলিফোন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তখনই কাউন্টার টেররিজমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে ফলপ্রসু আলোচনার জন্য নিশা দেশাইকে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলোচনা করে ৪ মে বুধবার তার ঢাকা সফরের দিন ঠিক করে।

আসন্ন এই সফর নিয়ে এরই মধ্যে সরকার ও বিরোধী পক্ষে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিএনপির পক্ষ থেকে এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরার প্রস্তুতি চলছে।

আসন্ন সফরে বাংলাদেশে আইএস এর কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা তুলতে পারেন নিশা দেশাই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আইএস তৎপরতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সব সময়ই শক্তভাবে ওই সন্দেহ নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। আসন্ন সফরে এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা জমে উঠতে তারে।

সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে তাই নিশা দিশাই এর এ সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।