পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাকারীদের হুঁশিয়ার করে বলেছেন, গুপ্তহত্যা করে কেউ পার পাবে না। এভাবে পরিবারের ওপর হাত দিতে শুরু করলে কারও হাতই থেমে থাকবে না। জনগণকে থামিয়ে রাখতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হত্যাকারী এবং তাদের প্রভু যে-ই হোক, তাদের আমরা রেহাই দেব না। যারা পরিবারের ক্ষতি করছে, তাদের হিসাব পাই পাই করে নেব।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ফজিলাতুনে নেসা বাপ্পীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যারা গুপ্তহত্যায় জড়িত, তারা যদি মনে করে, গুপ্তহত্যা করে পার পেয়ে যাবে, ইনশা আল্লাহ তারা পার পাবে না। তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই হবে। এটা হলো বাস্তব কথা।’
শেখ হাসিনা বলেন, মসজিদের ইমাম, প্যাগোডা, মন্দিরের পুরোহিত, গির্জার ফাদারকে আক্রমণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষককে হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি এর আগে যেটা কখনো দেখা যায়নি, পুলিশ অফিসার, যিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁর স্ত্রীকে কীভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। তাঁকে কুপিয়ে আর গুলি করে প্রকাশ্য দিবালোকে ছোট্ট শিশুর সামনে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, সন্ত্রাস দমন করা। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করেছে, এই পুলিশ অফিসার তাদের গ্রেপ্তার করেছেন। বোমা বানানোর সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বহু কিছু উদ্ধার করেছেন। এরা তাঁর পরিবারের ওপর হাত দিয়েছে। একটা কথা এখানে বলতে চাই, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, হত্যার ধরন একই রকম। তারা ঠিক একই জায়গায় কোপ দেয়, একইভাবে গুলি করে মারে। এ ধরনের কয়েকটি গুপ্তহত্যা ঘটেছে। তার অনেকগুলোর আসামি ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, অবশ্যই তারা গ্রেপ্তার হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি কথা হলো, আজকে যারা পরিবারের ওপর হাত দিয়েছে, তারা কি ভুলে যায় তাদেরও পরিবার আছে? তাদেরও বাপ, মা, ভাই, বোন আছে। তাদেরও স্ত্রী আছে। একবার একদিক থেকে যদি আঘাত আসে, তাহলে অন্যদিক থেকেও আঘাত যেতে পারে। এটা কি তারা ভুলে যাচ্ছে? কাজেই যারা এ ধরনের সন্ত্রাসী ও গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িত, আমি তাদের পরিবার, বাবা, মা, ভাইবোন ও স্ত্রীকে বলব, এর থেকে যেন তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরত থাকতে বলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে গুপ্তহত্যা করে যদি কেউ মনে করে দেশ একেবারে উল্টে দেবে, তা কিন্তু তারা পারবে না। হত্যাকারী ঠিকই ধরা পড়বে। তারা সাজা পাবে। সর্বোচ্চ সাজা এই হত্যাকারীরা ভোগ করবে। খুনের মামলা কখনো তামাদি হয় না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছিল, সেই খুনিদেরও আমরা বিচার করেছি।’
Discussion about this post