আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে পার্টি অফিসে লাগানো পতাকা সরানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জেলাটির সন্দেশখালী এলাকার ন্যাজাটে পার্টি অফিসে দলীয় পতাকা সরানোকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ধরে চলা সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নিহতরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়েছে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির পুলিশ। সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় স্থানীয় অনেকেই এলাকা থেকে অন্য জায়গায় সরে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ভাষ্য মতে, শনিবার সন্ধ্যায় সন্দেশখালিতে বুথ কমিটির বৈঠক হচ্ছিল। তখন পার্টি অফিসের পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। যে পার্টি অফিসে বুথ কমিটির বৈঠক হচ্ছিল, কয়েকদিন আগে ওই অফিসেই বিজেপি তাদের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেয়। এদিন সেই পতাকা খুলে ফের তৃণমূলের পতাকা লাগানোর চেষ্টা করতেই বিজেপি কর্মীরা বাধা দেয়। পাল্টা প্রতিবাদ করে তৃণমূল কর্মীরা। এসময় একটি গুলি এসে লাগে কায়েমের গায়ে। সেখানে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।
রাজ্যের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, সংঘর্ষে তাদের দলের পাঁচ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের লাশ পাওয়া গেলেও বাকি দুজনের লাশ পুলিশ সরিয়ে ফেলেছে।
নিহত বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সুজিত মণ্ডল, তপন মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডলের লাশ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তাদের চার কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে শঙ্কর মণ্ডল ও দেবদাস মণ্ডল নামে দু’জন নিহত হয়েছেন, এমন খবর তারা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন বসু।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, আমাদের এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বিজেপির কর্মীরা তাকে মেরে ফেলেছে। তার মাথায় গুলি করা হয়েছে। বিজেপি যদি মারার রাজনীতি শুরু করে আমরাও ছাড়ব না।
পরিস্থিতি জানাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি মুকুল রায়। সংঘর্ষের এ ঘটনার জন্য তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে মাত্র দুটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। তবে এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮। অন্যদিকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে ২২টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা পেয়েছিল ৩৪টি আসন।
Discussion about this post