বিডি ল নিউজঃ আমির খান মানেই ব্যতিক্রম কিছু থাকতেই। গতানুগতিক ছবি এখন আর আমির খান করেন না। নিজের এবং পরিচালকের মেধার বিকাশের মিশ্রণে এবার আমির খান এবং আনুশকা অভিনীত পিকে’র ঝুলিতে প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনা-আলোচনা আর বিতর্কের যেন কোন কমতি নেই। আর এই সিনেমার জন্য প্রতিনয়ত আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে পিকে টিমকে। খুব সম্প্রতি পিকের সম্প্রচার বন্ধের লক্ষ্যে সিনেমার প্রযোজক রাজ কুমার হিরানি এবং সিদ্ধার্থ রয় কাপুরের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। তবে কি সিনেমাটি প্রকৃত পক্ষেই বন্ধ হয়ে যাবে?

প্রথম দিকে এই বিতর্কের শুরু পিকের পোস্টারে আমির খানের নগ্ন পোজ দিয়ে। পোস্টারটিতে আমিরকে একবারে নগ্ন অবস্থায় লজ্জাজনক স্থানে ট্রাঞ্জিস্টর আগলে রাখার ব্যাপারটি অনেকের চোখেই নিছক যৌনতা উসকানিমূলক এবং অশ্লীলতার প্রচার বলেই মনে হয়েছে। সাথে সাথেই এই পোস্টার ব্যান্ডের জন্য রাস্তায় সামাজিক এবং ধর্মীয় কিছু সংস্থাকে নেমে পড়তে দেখা যায়।
এরপর সিনেমাটি মুক্তির পেলে অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস এবং সোশ্যাল জাস্টিস ফ্রন্ট নামক একটি ভারতীয় এনজিও সিনেমাটির সম্প্রচার বন্ধের দাবি জানায়। তাদের এই মর্মে জানায়, পিকে সিনেমাতে এমন কিছু দৃশ্য রয়েছে যা ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং আধ্যাত্মিক অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে। কাজেই অনতিবিলম্বে আমির খান-আনুশকা শর্মা অভিনীত পিকে সিনেমাটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হউক।
এখানেই শেষ নয়, ওই এনজিওর করা দাবিতে আরেকটু হাওয়া লাগে যখন হিন্দু লিগ্যাল সেলের সেক্রেটারি প্রাসান্ত প্যাটেল সিনেমার প্রযোজক রাজ কুমার হিরানি এবং সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। প্রাসান্ত প্যাটেলের মতে, পিকে সিনেমাটিতে নির্মাতারা হিন্দু ধর্মের দেবতাদের নেতিবাচকভাবে পর্দায় তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, বিশেষ করে ভগবান শিভাকে অতিরঞ্জিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাই সিনেমাটির প্রচার বন্ধ করে দেয়া উচিত।
সব অভিযোগই তো বোঝা গেল। এবার পিকের ভাগ্য পুরোপুরি নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের উপর। এখানেই সব অভিযোগের একেবারে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট! এমন কী জানালো সুপ্রিম কোর্ট?

তবে শুনুন, পিকে সিনেমা সম্প্রচার বন্ধের আর্জিকে একেবারে নাকচ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পিকে সিনেমার সম্প্রচার বন্ধের কোন প্রয়োজন নেই। শুধু তাই নয়, অনেকটা আমিরের ঢংয়ে বলা হয়, সিনেমার উপস্থাপন এবং কাহিনীর কারণে যদি কেউ ভেবে থাকেন যে, তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে তবে সে সিনেমাটি না দেখলেই পারেন।
আরএম লোধা (চীফ জাস্টিস অব ইন্ডিয়া) বলেন, যদি সিনেমাটি আপনার ভালো না লাগে তবে সিনেমাটি না দেখলেই হয়। এর পেছনে সবচেয়ে নাজুক ধর্মীয় দিকটি টেনে আনা ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, সিনেমা একটি বিনোদনের জায়গা। আর এমন একটি শাখায় যদি অতি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আনা হয় তবে মনুষ্য জাতি অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আর একটি কথা না বললেই নয়, এমন কী আছে এখন যা ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না? আপনি চাইলেও আসলে কতটা লুকিয়ে রাখতে পারবেন?
পিকে সিনেমার উপস্থাপন এবং মেসেজ নিয়ে সমাজের উন্নয়নে কাজ করা এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের নানা অভিযোগ থাকলেও সুপ্রিম কোর্টের তুলে ধরা তথ্য যে সমালোচকদের দৃষ্টিকোণ পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করবে তাই আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: বলিউড লাইফ, প্রিয়
Discussion about this post