ডেস্ক রিপোর্ট
বিভিন্ন মামলায় বদলি আসামি হয়ে সাজাখাটার মত ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে (গণমাধ্যমে) যাওয়া (প্রকাশিত) হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে সোমবার (৭ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।
আগে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমী নামের এক নারীর পরিবর্তে সাজাভোগকারী মিনুকে মুক্তি ও মূল আসামিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তিন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
তারা হলেন- চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এমএ নাসের, অ্যাডভোকেট নুরুল আনোয়ার এবং অ্যাডভোকেট বিবেকানন্দ চৌধুরী। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম আদালতের ক্লার্ক সৌরভকেও আগামী ২৮ জুন তলব করেছেন হাইকোর্ট।

আদালতে মিনুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
মামলার আদেশ প্রদানের পর হাইকোর্ট মন্তব্য করেন, আমরা এ ধরণের ঘটনার রুট খুঁজে বের করতে চাই। আমরা মনে করি এসব ঘটনা গণমাধ্যমে আসা উচিত। মানুষ যেন এসব কাজ করতে না পারে।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ আদালতকে বলেন, এই ঘটনার সর্বোচ্চ প্রচার হবে। আমাদের কোর্টেও গণমাধ্যমকর্মীরা আছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনার মতো অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
কোন একটি মামলায় কারাগারের একটি বালাম বই দেখতে গিয়ে মিনুর সাজাখাটার বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে দেখা যায়, একজন আসামীর পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন আরেক নিরঅপরাধী নারী। পরবর্তীতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে এ মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের আদালত।
কোনওকিছুর মিল না থাকায় একজনের স্থলে আরেকজন জেলখাটার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউট (পিপি) মো. নোমান চৌধুরী বলেন, আদালতে সংরক্ষিত ছবি সম্বলিত নথিপত্র দেখে কুলসুম আক্তার কুলসুমী আর মিনু এক নয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন। যেহেতু ইতোমধ্যে এ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে তাই মামলার উপ-নথি দ্রুত সময়ের হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
হত্যা মামলায় আদালত যাবজ্জীবনসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে। কিন্তু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেল খাটছেন মিনু নামে এক নারী। নামের মিল না থাকার পরও কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনু প্রায় ৩ বছরের অধিক সময় ধরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
পরে গত ২৩ মার্চ মিনুর নথি হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞার আদালত এ আদেশ দেন। পরে মামলার নথি হাইকোর্টে এলে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
Discussion about this post