ডাকাত সর্দার আরব আলী দীর্ঘদিন ধরে বন্দি কারাগারে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই তার অপরাধ। আদালতের এজলাশে বসেই, সহযোগিদের সঙ্গে চলে শলা-পরামর্শ।
আর এজন্য কারাগারে কাস্টডি ডেটের ভুয়া কাগজ দেখিয়ে, হাজির হন আদালতে। অথচ ১১ মামলার কোনটিতেই আদালতে হাজির হওয়ার তারিখ দেননি বিচারক। এমনকি আদালতের নথিতেও পাওয়া যায়নি, মামলার শুনানির কোনো তারিখ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ভয়াবহ এ সব তথ্য।
আরব আলী হাওলাদার। চল্লিশ উর্ধ্ব এ মানুষটির, আরেক পরিচয় আরব ডাকাত।
পুলিশের নথি বলছে, যিনি রাজধানীর উত্তরখান-দক্ষিণখানসহ মাদারীপুর ও ফরিদপুরের নানা জায়গায়, গড়ে তোলেন ভঙ্ককর ডাকাত দল। শতাধিক সদস্যের এ দলের বেশিভাগই তার আত্মীয় স্বজন। ঠিকানা মাদারীপুরের শিবচর। ৬০ টিরও বেশি ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে, দলটির বিরুদ্ধে। রয়েছে হত্যার অভিযোগও। যার শিকার হয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার মুকিম ডাকাতের হয়েও কাজ করেছে এ বাহিনী।
২০০৮ সালের ঢাকার উত্তরখানের পূর্ব পাড়ায় ডাকাতি ও হত্যার অভিযোগে, আরব আলী ও তার সাত ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকেই কারাগারেই দিন কাটছে, কুখ্যাত এ ডাকাতের। কিন্তু থেমে নেই তার বাহিনীর কর্মকাণ্ড।
তাই প্রশ্ন, কার নেতৃত্বে চলছে বিশাল এ বাহিনী। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ভয়ঙ্কর সব তথ্য। এখানেও সেই নাটেরগুরু আরব আলী। কারাগারে বসেই নির্দেশনা দিচ্ছেন দুর্ধর্ষ সব ডাকাতির।
কিন্তু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে তা!এক্ষেত্রে আরব ডাকাতের কৌশল বেশ অভিনব। তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে এখন চলছে, হত্যাসহ মোট ১১টি মামলা। ফলে প্রায়ই তাকে আসতে হয় আদালতে। তবে তা আদালতের নির্দেশ মেনে। কিন্তু রহস্য অন্যখানে। তিনি আসেন নির্দেশ ছাড়াও। আর এজন্য ব্যবহার করেন, ভুয়া কাগজ আর জাল কাস্টডি ডেট। এ সুযোগে খোদ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের-১-এর এজলাসেই বসান, ডাকাতির নীলনকশা তৈরির আখড়া।
গেল ২৬ মেতেও আদালতে আসেন আরব ডাকাত। অথচ নথি যাচাই করে দেখা যায়, ওই দিন মামলার কোনো তারিখ-ই ছিল না তার। কিন্তু আসামী হাজির বিচারকের অনুপস্থিতিতে খালি এজলাসেই সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে করেন বৈঠক।
কিন্তু কীভাবে সম্ভব হলো এতোকিছু? কীভাবেই বা চোখ এড়িয়ে গেলো আদালত কিংবা সরকারি কৌসুলির? এমন প্রশ্নে পাবলিক প্রসিকিউটর দায় চাপালেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকারের ওপর।
কুখ্যাত আরব আলী ডাকাত তো শুধু একটি উদাহরণ। কারাগারে থাকা অনেক ভয়ঙ্কর ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরাই এমনভাবে আসেন বিভিন্ন আদালতে। তাদের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সহযোগীদের সাথে করেন নানা পরিকল্পনা। আর এর সবই হয় বিচারকের অগোচরে। এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে। সূত্র: চ্যানেল টোয়েন্টিফোর




Discussion about this post