বিডি ল নিউজঃ জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে, সরকারের মন্ত্রিপরিষদ থেকে অচিরেই জাতীয় পার্টি (জাপা) পদত্যাগ করবে বলে জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদ।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘সংসদে প্রকৃত বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে জাতীয় পার্টির যেসব সদস্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদে আছে তারা পদত্যাগ করবে। এ বিষয়ে দলের চেয়ারম্যানের (এরশাদ) সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আলোচনা চলছে। অচিরেই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নেব।’
দেশে এখন মধ্যবর্তী নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। জনগণ এ মুহূর্তে নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ। রওশন বলেন, এখন দেশের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপি যে আন্দোলন করছে, তা তাদের নেতা-কর্মীরা করছেন। তাঁদের সঙ্গে জনগণ নেই। দেশে এখন শান্তি বিরাজ করছে—এমনটা দাবি করে রওশন বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করা হলে বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। চীন, জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে, তারা পিছিয়ে যাবে। এতে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
দেশের মানুষের শান্তির জন্য এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দূর করার জন্য সব দলের মধ্যে সংলাপ হওয়ার প্রয়োজন দাবি করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আলোচনা বা সংলাপ হওয়া উচিত দেশের অস্থিতিশীল রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে। তবে মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে কোনো সংলাপের প্রয়োজন এখন নেই। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বিএনপি না এসে ভুল করেছে। এখন তারা আবারও ভুল করছে। তারা নির্বাচনে আসলে হয়তো বা তারাই সরকার গঠন করতো। না হলে বিরোধী দল তো হতো। এখন তো তারা কিছু না। সংসদেও আসতে পারছে না।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের অবরুদ্ধের বিষয়ে সংসদে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে তার (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তার জন্য এসব করা হচ্ছে তাহলে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। হয়তো সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে এমন। আর যদি সরকার গণতন্ত্রের জন্য খালেদা এমনটি করে তাহলে আমরা তা সমর্থন করি না। আর তিনি তো অবরুদ্ধ নন। প্রধানমন্ত্রী তো বলেছেন উনি (খালেদা জিয়া) চাইলে বাসায় যেতে পারবেন।’
দশম জাতীয় সংসদে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতীয় পার্টি নির্বাচেন অংশ নিয়েছিলো। এই ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে সারা দেশব্যাপী সংঘাত হানাহানি চলছিল। এমন পরিস্থিতি আমি মনে করেছিলাম সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখতে হলে নির্বাচন করা প্রয়োজন। সেজন্যই তখন জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়’।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ আমরা এখানে এসেছি। আপনারা জানেন, ২০১৩ সালে কি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। যদি ঠিকমতো নির্বাচন না হতো তাহলে অসাংবিধানিক কেউ ক্ষমতায় আসতো। তাতে দেশের জন্য ভালো হতো না মঙ্গল হতো না। সেজন্যই আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখার জন্য আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। নির্বাচন হওয়ার পর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে। দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। মানুষের জীবনে স্বস্তি এসেছে। উন্নয়নমূলক কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘দশম সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে হরতাল অবরোধে প্রায় ৪০০ মানুষ মারা গেছে। এছাড়া ১৪০০ মানুষ পেট্রোল বোমায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।’
Discussion about this post