ডেস্ক রিপোর্ট
রাজধানীর কদমতলীতে মা, বাবা ও বোনকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মেহজাবিন ইসলাম মুনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনুতপ্ত নন তিনি।
মেহজাবিন বলেছেন, ‘পরিবারের সাথে আমার দ্বন্দ্ব ছিল। এছাড়া ছোট বোনের সাথে আমার স্বামীর পরকীয়া ছিল। এ কারণে আমি তাদের হত্যা করি। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে আমি মনে করছি।’
রোববার (২০ জুন) আদালত প্রাঙ্গণে এভাবেই কথাগুলো গণমাধ্যমকে বলছিলেন মেহজাবিন।হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে মেহজাবিন আরও বলেন, ‘এ তিনজনকে আমি একাই হত্যা করেছি। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে কেউ জড়িত নয়। আমি এতে বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নই।’

আজ দুপুরে মেহজাবিনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ড নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পরিদর্শক জাকির হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রাজধানীর কদমতলীতে একই পরিবারের মা, বাবা ও বোনকে হত্যার ঘটনায় মেহজাবিন ইসলাম মুন ও তার স্বামী শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।রোববার দুপুরে মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর।
তিনি বলেন, নিহত মাসুদ রানার বড় ভাই ও আটক মেহজাবিন ইসলাম মুনের বড় চাচা সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুন ও তার স্বামী শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকালই মেহজাবিন ইসলাম মুনকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার স্বামী শফিকুল ইসলাম আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে। সুস্থ হলে এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে।
গতকাল পুলিশ জানিয়েছিল, পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন মেহজাবিন মুন। তিনি তার বাবা মাসুদ রানা (৫০), মা মৌসুমী আক্তার (৪৫) ও বোন জান্নাতুলকে (২০) হত্যা করেন।
শনিবার (১৯ জুন) মা-বাবাসহ ছোট বোনকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন দেন মুন নিজেই। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কদমতলীর মুরাদপুর হাজী লাল মিয়া সরকার রোড এলাকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে। আটক মেহজাবিন থাকেন আলাদা বাসায়। মায়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন তিনি।
কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, নিহতের বড় মেয়ে মেহজাবিন (শনিবার) সকালে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বলেন, ‘মা-বাবা ও ছোট বোনকে হত্যা করেছি। আপনারা আসেন। এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান।’
জানা যায়, গত দুদিন আগে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন মেহজাবিন। এসেই তার ছোট বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
Discussion about this post