২ জুন ঢাকা থেকে ফেরার পথে কুমিল্লার চান্দিনায় চট্টগ্রামগামী ইউনিক বাসে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমার আগুনে দগ্ধ হন কলেজ শিক্ষক ও বাস যাত্রী রনজিত শর্মা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে দশদিন পর শুক্রবার ভোরে তিনি মারা যান।
সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা জানান, তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শুক্রবার রাতে নিহত রনজিতের মরদেহ বাড়ি পৌঁছার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা।
এদিকে, বোমাবাজদের হাতে স্বামীর অকাল মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্ত্রী পপি শর্মা। তিন বলেন, শিক্ষকতা পেশায় থেকে দেশ ও জাতির সেবা করে আসছিলেন তিনি। শেষে তাকেই এভাবে মরতে হবে তা আমরা ভাবতেই পারিনি। দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। ছেলে বর্ষণ শর্মা ও মেয়ে বৃন্দা শর্মাও বাবাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ। বাবার মৃত্যুর খবরে রনজিত শর্মার এই দুই সন্তান ভারতের কলকাতা থেকে ছুটে এসেছেন মিরসরাইয়ে।
পরে রাত দেড়টার দিকে পারিবারিক শশ্মানে তার সৎকার কার্য সম্পন্ন হয়। এ সময় বড়ভাই বলরাম শর্মা জানান, রনজিত শর্মার জন্মের পর তাদের বাবা মারা যান। অনেক কষ্টে ছোট ভাইকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। কর্মজীবনে জ্ঞান বিতরণের মহৎ পেশা কলেজ শিক্ষকতাকে বেছে নেন রনজিত। পুরো গ্রামবাসী উচ্চ শিক্ষিত রনজিতকে নিয়ে গর্ব করতেন। সর্বশেষ তিনি রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০১৪ সালে তিনি অবসরে যান। ঢাকায় শিক্ষা অধিদপ্তরে তার পেনশন সংক্রান্ত্র কাগজপত্র জমা দিয়ে ২ জুন বাড়ি ফেরার পথে বোমা হামলায় শিকার হন তিনি।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার দিন কোন দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিলো না। একই ঘটনায় রনজিত শর্মাসহ আরো ঘুমন্ত আরো পাঁচ যাত্রী পেট্রোল বোমায় দগ্ধসহ মোট আট যাত্রী আহত হয়। শুক্রবার দিবাগত রাতে রনজিত শর্মার মৃতদেহ মিরসরাইয়ে পৌঁছার পর সৎকার কার্য সম্পন্ন হয়েছে।




Discussion about this post