বরগুনা প্রতিনিধি: বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের একমাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। গত মাসর এই দিনে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করেন নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ তাদের সহযোগীরা। এরপর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিফাত শরীফ।
রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো দেশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি ওঠে সব মহলে। তবে খুনের পর এক মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে না পারায় জনসনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে ১৫-২০ দিনের মধ্যে এ মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এবিষয়ে বরগুনার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের এক মাসের মধ্যে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছে পুলিশ। এ মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা বেশ কিছু আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামতের জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে পুলিশ। এসব আলামতের মধ্যে নয়ন বন্ডের বাসা থেকে জব্দ করা মেয়েদের একটি জামা, একটি চিরুণী, খোদাই করে শামুকের গায়ে এন+এম লেখা একটি শামুক, নয়ন ও মিন্নির একসঙ্গে একটি ছবি রয়েছে। এছাড়া নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও পুলিশ মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করেছে। আর মোবাইল ফোনসহ কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক উপকরণ মামলার জব্দ তালিকায় রয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনে মধ্যেই এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অত্যন্ত সতর্কভাবে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে মামলার তদন্তের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ মামলার ১৫ জন অভিযুক্ত গ্রেফতারের পর আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এবং গ্রেফতার না হওয়া এ মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। কোনো প্রকার অবহেলা এবং কালক্ষেপণ না করে এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে।
বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খোদ প্রধানমন্ত্রীও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এরপর থেকে একে একে গ্রেফতার হয় এ মামলার এজহারভুক্ত সাত আসামিসহ ভিডিও ফুটেজ ও তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও আট অভিযুক্ত। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সাতদিন পর পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড।
Discussion about this post