শরীয়তপুর প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত যুবলীগ নেতার নাম ইমরান হোসেন সরদার (৩৫)। তিনি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার জেরে নিহতের সমর্থকরা প্রতিপক্ষের বাড়ি ঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে গরু-ছাগল সোনার গহনা টাকা পয়সা নিয়ে যায়।
শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহতের বোন রেশমা বেগম ও নড়িয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নশাসন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও বর্তমান চেয়ারম্যান বাবুল মোল্যার মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছিল। এ সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ ও মামলা মোক্দ্দমা বিদ্যমান।
শনিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নশাসন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের গাড়ি চালক সরদার কান্দি গ্রামের ফজল সরদারের ছেলে ইমরান সরদার (৩৫) নশাসন ডিগ্রীবাজারে দেলোয়ার তালুকদারের বাসায় গাড়ি রেখে সরদার কান্দির বাড়িতে ফিরছিলেন।
রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় নশাসন মাঝিরহাট নামক স্থানে মহাসড়কের কাছে কবরস্থানের পাশে পৌছলে প্রতিপক্ষের লোকেরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। তার আর্তচিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করেন।
ঢাকা যাওয়ার পথিমধ্যে রাত আনুমানিক ১টায় সে মারা যায়। লাশ ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মালেক মাঝি নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের জের ধরে নিহত ইমরান সরদারের সমর্থকরা স্থানীয় জালাল হাওলাদার, দুলাল হাওলাদার ও খোকন হাওলাদারের বাড়িতে ব্যাপক হামলা ও লুটপাট চালায়। এসময় সেখান থেকে ৭টি গরু, ২টি ছাগল, ২টি স্বর্ণের চেইন ও টাকা পয়সা নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নশাসন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, হাইব্রিড আওয়ামী লীগের লোকেরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নড়িয়া থানার ওসি মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।




Discussion about this post