পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে ২৫ বছর আগে ১৯৯৪ সালে পাবনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলার ঘটনায় নয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ মামলায় ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলার ৫২ আসামির মধ্যে জীবিত আছেন ৪৭ আসামি। যাদের মধ্যে কারাগারে থাকা ৩২ জনকে আজ আদালতে হাজির করা হয়।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় এ রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুস্তম আলী।
এর আগে ৩০ জুন রবিবার পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এ উপস্থিত বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীসহ মামলার সকল আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক রুস্তম আলী। এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৫২ জন। বাকিদের নামে ওয়ারেন্ট জারি করেছেন আদালত।
চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু এবং অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ট্রেনটি প্রবেশের আগে রেলগেট এলাকায় অতর্কিতে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
এই ঘটনায় করা মামলায় প্রথমে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জন আসামি থাকলেও পরবর্তীতে সিআইডি অধিকতর তদন্ত শেষে মোট ৫২ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয়। এদের মধ্যে গত ২৫ বছরে ৫ জন মারা গেছেন। ৩২ জন কারাগারে ও বাকি ১৫ জন এখনও পলাতক।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুনভাবে ঈশ্বরদীর শীর্ষ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি দায়েরের পর এই মামলায় পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্টও দাখিল করে।
কিন্তু আদালত সে রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
প্রথম চার্জশিটের ৭ আসামির বাইরেও এই মামলায় যাদের নতুনভাবে যুক্ত করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শামসুল আলম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক কে.এম. আক্তারুজ্জামান আক্তার, পাকশীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাহাপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন, যুবদল নেতা আজিজুর রহমান শাহীন, সেলিম আহমেদ, পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, বিএনপি নেতা ইসলাম হোসেন জুয়েল, শহীদুল ইসলাম অটল ও আব্দুল জব্বারসহ প্রমূখ। এরা সবাই বিএনপি নেতা।




Discussion about this post