ডেস্ক রিপোর্ট
সাত দিনের মধ্যে দেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল (এনএলসি)।
বুধবার (৬ অক্টোবর) এনএলসির পক্ষ থেকে এমন দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম জুলফিকার আলী জুনু। তিনি আবেদনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরিচালিত হতে হবে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে। করোনা পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় সরকারঘোষিত লকডাউনের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় সরকার আইন করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় সারা দেশে বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সকল আদালত, স্কুল, কলেজ চলমান রয়েছে।
এছাড়া সারা দেশে মেয়র ও ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হচ্ছে। অতএব বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও নির্বাচন সম্পন্ন করে দেশের আইনজীবীদের ভোটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত কমিটি গঠনে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই বলে আমরা মনে করি।
অতএব সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বার কাউন্সিলকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে কাউন্সিলের কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করতে নির্বাচিত কমিটি গঠনকল্পে সাত দিনের মধ্যে নির্বাচনী তফসিল দাবি করছি।
অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে বার কাউন্সিলের নির্বাচন তফসিল ঘোষণার অনুরোধ জানায় এনএলসি।
বার কাউন্সিল পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এর আগে গত ৪ আগস্ট সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

ওই দিন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার, ১৯৭২ (রাষ্টপতির ১৯৭২ সালের ৪৬ নম্বর আদেশ) এর অনুচ্ছেদ (৮) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১৫ সদস্যের সমন্বয়ে এই অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়।
অ্যাডহক কমিটির সদস্যরা হলেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন, যিনি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান বাদল, অ্যাডভোকেট এইচ এ এম জহিরুল ইসলাম খান (জেড আই খান পান্ন), অ্যাডভোকেট শাহ মো. খসরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম।
এছাড়াও রয়েছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট কাজী নজীবুল্লাহ হিরু, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, সিলেট আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট এ এফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী মিন্টু, ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট কবির উদ্দিন ভূঞা, খুলনা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট পারভেজ ইসলাম খান, রাজশাহী আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. ইয়াহিয়া এবং সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রহমান কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে সচিব আরও বলেন, বার কাউন্সিলের এই অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ হবে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই অ্যাডহক কমিটি ২০২২ সালের ৩১ মে বা তার আগে বার কাউন্সিলের নির্বাচন সম্পন্ন করবে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বার কাউন্সিল ২০২২ সালের ১ জুলাই দায়িত্বভার গ্রহণ করবে।
করোনার কারণে নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বার কাউন্সিলের এই অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
Discussion about this post