সিআর৭ কে স্বাধীনতা না দেওয়াটাই রিয়াল মাদ্রিদের চাল

11
VIEWS

বিডি ল নিউজঃ

Cristiano Ronaldo

রিয়াল মাদ্রিদ-১

আটলেটিকো মাদ্রিদ-০

(দু’পর্ব মিলিয়ে ১-০)

মোনাকো-০

জুভেন্তাস-০

(দু’পর্ব মিলিয়ে ০-১)

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের ঘরোয়া যুদ্ধটা টিভিতে দেখতে বসেছিলাম দুটো কারণে।
এক, বেল-বেঞ্জিমা ছাড়া রোনাল্ডো কতটা টানতে পারে রিয়াল মাদ্রিদকে।
দুই, রিয়ালের কাঁটা হয়ে ওঠা আটলেটিকো কোচ সিমিওনে মগজাস্ত্র থেকে ফের নতুন কী চাল বার করেন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।

কিন্তু নব্বই মিনিটেও দু’টোর কোনওটাই ঠিক ভাবে দেখতে পেলাম না। চোটের জন্য বেল-বেঞ্জিমা না থাকায় রোনাল্ডো ওর টিপিক্যাল আক্রমণাত্মক খেলায় বেশি মনোযোগ দিতে পারল না। আবার সিমিওনের ‘গুটিয়ে নেওয়া’ স্টাইল খেলাও শেষমেষ কার্যকরী হল না। মনে হল দু’টো ব্রিটিশ দলের খেলা দেখলাম। যারা আক্রমণে যেতে ভয় পাচ্ছে। কোনওক্রমে একটা গোলেই সন্তুষ্ট।

বেল-বেঞ্জিমা না থাকায় এমনিতেই গেমপ্ল্যান বদলাতে হয়েছে রিয়াল কোচ আন্সেলোত্তিকে। ধুরন্ধর প্রতি-আক্রমণাত্মক একটা দলকে হয়ে উঠতে হয়েছে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক। রোনাল্ডোর রোনাল্ডোর মতো খেলার স্বাধীনতা ছিল না মঙ্গলবার রাতে। কোচই সেটা দেননি। রোনাল্ডোকে বরং অনেক নীচ থেকে খেলে বারবার পজিশন বদলে বেল, বেঞ্জিমার কাজটাও করতে হয়েছে।
রিয়াল এমন একটা দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল যারা এই মরসুমে ওদের বলে-বলে হারাচ্ছে। বাকিদের সঙ্গে মাঝারিমানের খেললেও রিয়ালকে দেখলেই যেন কিছু একটা হয় আটলেটিকোর। যার কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি দেব সিমিওনেকে। অতীতে প্লেয়ার আর ইদানীং কোচ হিসেবে রিয়ালকে দেখে দেখে সিমিওনের মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। জানেন, তাঁকে রিয়ালের বিরুদ্ধে খেলতে হলে বিপক্ষকে স্বাধীনতা দিতে হবে বলের উপর। শুধু অপেক্ষা করে থাকতে হবে বিপক্ষের একটা ভুলের জন্য। এই মানসিকতাটা রিয়ালের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়ে চলেছে আটলেটিকো। এই ম্যাচেও ঠিক সেটাই ছকেছিলেন সিমিওনে। ডিপ ডিফেন্ড করব, জট বাঁধিয়ে দেব। লং বল-এ মান্দজুকিচের উচ্চতা কাজে লাগাব। সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই সব কিছু ঠিকঠাক যাচ্ছিল। টুইস্টটা এল শেষ পঁচিশ-ছাব্বিশ মিনিটে সিমিওনের মাঝমাঠের জেনারেল আর্দা তুরানের লাল কার্ডে। যার পরে রিয়ালের এগারো জনের বিরুদ্ধে আর উঠে দাঁড়াতে পারল না দশ জনেরআটলেটিকো।

রিয়ালের জয়ের অন্যতম দুই কারিগর ইস্কো আর রদ্রিগেজ। ইস্কোর দুর্দান্ত পেরিফিরিয়াল ভিশন! স্প্যানিশ ফুটবলারদের মতো গতি নেই। কিন্তু  সুচের মধ্যে দিয়েও বল গলিয়ে দিতে পারে যেন! ভিড়ের মধ্যেও এত নিখুঁত পাস বাড়ানোর ক্ষমতা। রদ্রিগেজের আবার বাঁ-পা দুর্দান্ত। ওর সঙ্গে ওয়াল খেলেই তো রোনাল্ডোর পাসে হার্নান্দেজ গোলটা করল।

তার পরে অবশ্য যেটা দেখলাম সেটা অবাক করার মতোই। হার্নান্দেজ এক দিকে ছুটছে সেলিব্রেট করতে। রোনাল্ডো নিজের মতো সেলিব্রেট করছে। আমি নিজেও ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম তা হলে কি ভুল দেখলাম! গোলটা কি রোনাল্ডোই  করল। ওই মুহূর্তে কেউ টিভি চালালে হয়তো সেটাই ভাবত। জিনিসটা খুবই দৃষ্টিকটু ছিল। দল যখন একটাই, সেমিফাইনালে উঠল যখন সবাই, তখন আলাদা করে সেলিব্রেট করা কেন? আমার খেলার সময় অবশ্য গোল করলে ফুটবলারটির সামনে যে থাকত তার সঙ্গেই সেলিব্রেট করতে দেখা যেত তাকে।

সেমিফাইনালে চাইব মোরিনহোর দলের মতো না খেলে গুয়ার্দিওলার দলের মতো খেলুক রিয়াল। সমর্থকরা সব সময় মাঠে যায় ভাল ড্রিবল দেখতে, ভাল গোল দেখতে। আর সেই কারণেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে গুয়ার্দিওলার পুরনো টিম বার্সেলোনাকে এগিয়ে রাখব। ওরা আনন্দ দিয়ে জিততে যানে। আর আমার কালো ঘোড়া জুভেন্তাস। ওদের খেলা গত রাতে যতটুকু দেখলাম, মনে হল সেরা সময়ের ইতালি!

সৌজন্যে আনন্দবাজার

Next Post

Discussion about this post

নিউজ আর্কাইভ

November 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.