পাবনায় আশ্রমের সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে কুপিয়ে হত্যা করার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সংগঠনটির বার্তা সংস্থা আমাক নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইন তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট’ এমন তথ্য দিয়েছে।
ঝিনাইদহে পুরোহিত হত্যার তিন দিনের মাথায় এ ঘটনা ঘটল। আর গত পাঁচ দিনের মধ্যে এটা চতুর্থ হত্যাকাণ্ড।
নিত্যরঞ্জন পান্ডে (৬২) পাবনার সদর উপজেলার হিমাইতপুর গ্রামে শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের (হিমাইতপুর ধাম) সেবায়েত। গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রাতর্ভ্রমণে বের হলে পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রধান ফটকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই হত্যার মিল রয়েছে।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের পেছনে আশ্রমটি অবস্থিত। আশ্রমের সামনে একটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। মানসিক হাসপাতালের চারপাশে পিচঢালা পথ। এ পথেই নিত্যরঞ্জন প্রতিদিন ভোরে হাঁটতেন। তাঁর হাঁটার সঙ্গী ছিলেন আশ্রমের আরেক সেবক হরিপদ মজুমদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুজন একসঙ্গে আশ্রম থেকে বের হয়ে হাসপাতালের চারপাশের রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। তিনি কিছুটা ধীরে হাঁটায় পেছনে পড়ে যান আর নিত্যরঞ্জন এগিয়ে যান। তিনি মানসিক হাসপাতালের প্রধান ফটক পর্যন্ত এসে দেখেন, নিত্যরঞ্জন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তিনি চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ও মানসিক হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে আসেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
গত বছর থেকে দেশে নতুন মাত্রায় জঙ্গি তৎপরতা শুরু হয়। এর মধ্যে কেবল চলতি বছরের গত পাঁচ মাসেই বিভিন্ন জেলায় ১৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন পুরোহিত, সাধু, বৌদ্ধভিক্ষু, খ্রিষ্টান ধর্মযাজক, শিয়া, লালনভক্ত, পীরের অনুসারী, সমকামীদের অধিকারকর্মী, ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশ ও জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী। এসব ঘটনার বেশির ভাগেরই দায় স্বীকার করেছে আইএস ও আল-কায়েদার কথিত বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম। তবে পুলিশ বলছে, দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী জেএমবি বা আনসার আল ইসলাম এসব ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন।
Discussion about this post