ফরিদ মিয়া, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ঃ হরতাল আর অবরোধের কারনে হুমকির মুখে পরেছে টাঙ্গাইলের এতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প। চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অসংখ্য তাঁত আর এর সাথে কর্ম হারিয়ে বেকার হতে পারে এ উপেজলার কয়েক’শ শ্রমিক। বৈরান আলী নামের এক ব্যবসায়ী জানান, টানা অবরোধ আর হরতালের কারনে তার ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাটে কাপড় বিক্রি করতে গিয়ে বারবার শূণ্য হাতে ফিরতে হচ্ছে তাকে। আমির আলী জানান, আমার চারটি তাঁত রয়েছে। কাপড় বিক্রি করতে না পেরে শ্রমিকদের শ্রমের মজুরি দিতে পারছিনা। এভাবে চলতে থাকলে আমার তাঁত গুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
কাসেম মিয়া নামের এক তাঁত মালিক জানান, আমার পাওয়ারলোম তাঁত রয়েছে। ক্রেতাশুণ্য হাটে অবিক্রিত অবস্থায় কাপড়গুলো ফেরত আনতে হচ্ছে। শাড়ী উৎপাদন প্রায় বন্ধ। সবচেয়ে বিপাকে পরেছেন হাট নির্ভর নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত তাঁতিরা। কারন হাটে কাপড় বিক্রি হোক বা না হোক ঋন করে হলেও শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি ও সমিতি এনজিওতে সুদের টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
আরমান, মোতাহার, সিরাজুল ইসলাম সহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, তাঁত শিল্প বন্ধ হয়ে গেলে আমরা বউ পুলাপান নিয়া খামু কি। সরকার যেনো আমাগো মুখের দিকে চায়। তাঁত যেনো বন্ধ না হয়।
ক্রেতারা কাপড় ক্রয় করতে আসতে না পারায় অচল হয়ে পরেছে দেশের সবচেয়ে বড় শাড়ী কাপড়ের করটিয়া হাট। বন্ধ হয়ে পরেছে কয়েক কোটি টাকার কাপড় বেঁচা-কেনা। অন্যদিকে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী মোট উৎপাদনের বড় একটি অংশের ক্রেতা হচ্ছে ভারত। অবরোধের কারনে সেখানেও টাঙ্গাইল শাড়ী প্রবেশে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
গফুর মিয়া, রফিকুল ইসলাম, কাসেম, আইনুদ্দিন, আব্দুর রহিম মিয়া, জয়নাল মিয়া সহ অনেক ব্যবসায়ী জানান, এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে আমাদের তাঁত বন্ধ হয়ে যাবে। অর্ধহারে অনাহারে কাটবে আমাদের দিন। অসংখ্য শ্রমিক বেকার হয়ে পরবে। সরকারকে এক টেবিলে বসে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।
এমতবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকতায় একমাত্র তাঁত শিল্পকে তার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
Discussion about this post