নিজস্ব প্রতিবেদক: সু-প্রভাত বাসের চাপায় আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ১২ দফা দাবিতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক গেট এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে অবোরোধ করেছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক গেট এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে অবোরোধকারী শিক্ষার্থীদের কাছে যান ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। সেইসঙ্গে লিখিতভাবে দাবিগুলো উত্থাপনের অনুরোধ জানান।
মেয়রের অনুরোধে বিইউপি শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-
১. ১০ দিনের মধ্যে সুপ্রভাত বাসের চালক, হেলপার ও মালিকের ফাঁসি।
২. সু-প্রভাত ও জাবালে নূরসহ যেসব বাস আজ ও এর আগে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেসব বাসের রুট পারমিট বাতিল।
৩. চালক হেলপারের ডোপ টেস্ট।
৪. বাস-সহ গণপরিবহনের চালক-হেলপারের আইডি কার্ড ভিজিবল করা।
৫. বসুন্ধরা আবাসিক/যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জেব্রা ক্রসিংসহ নিহত আবরারের নামে ফুটওভার ব্রিজ করতে হবে দুই মাসের মধ্যে। ইত্যাদি।
বিইউপি’র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অনিক হাসানসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন ও লিখিতভাবে ১২ দফা দাবি পেশ করেন। মেয়র ঘটনাস্থল থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান।
এসময় ঘটনাস্থলে যান বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব সারোয়ার। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। যে দাবিগুলোতে আইনি জটিলতা আছে সেগুলোর আইনগত দিক দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে বাসচাপায় নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহতদের ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বেলা ১টার দিকে হঠাৎ সু-প্রভাত পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেন কয়েকজন।
বিইউপি’র আইআর বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তালহা ও শামীম আল হাসান বলেন, বাসটিতে দুই ব্যক্তি আগুন দেন। তারা বিইউপি’র ছাত্র নয়। আগুন ধরালে ধোঁয়া বের হয়। পরে ছাত্ররা ধাওয়া দিলে একজন পালিয়ে যায়। আরেকজনকে ধরে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে তার নাম জানা যায়নি।
ছাত্রদের বক্তব্য, দাবি আদায়ে তাদের আন্দোলন অহিংস। সেখানে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিতভাবে সু-প্রভাত বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। আগুনে বাসটির দুটি সিট পুরোপুরি পুড়ে গেছে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরাই বাসটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে অহিংস বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিচ্ছেন। ‘নিয়মের চক্রে মরে শেষ হচ্ছি’; ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; আবিরের বুকে রক্ত কেন?, কয়লার সড়কে রক্ত কেন?; ‘নিরাপদ সড়ক চাই; ভাইয়ের বুকে রক্ত কেন?; ‘প্রশাসনের প্রহসন মানি না মানব না’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হোক’; ‘আমার ভাইয়ের বুকের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’; ‘আবরার তোর স্মরণে, ভয় পাই না মরণে’ স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে বসুন্ধরা গেট সংলগ্ন এলাকা।
Discussion about this post