ক্যাপ্টেন কুকের বাজিমাত৷ অ্যাসেজের চতুর্থ টেস্টেও ইংল্যান্ডের কাছে ধরাশায়ী মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া৷ নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজ টেস্টে এক ইনিংস ও ৭৮ রানে হার ব্যাগি গ্রিনদের৷ এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে সিরিজ জিতে ঐতিহ্যবাহী অ্যাসেজ ট্রফি পুনরুদ্ধার করল ইংল্যান্ড৷ অন্যদিকে, অ্যাসেজের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন, ঘোষণা করলেন বিধ্বস্ত ক্লার্ক।
পুরো তিনদিনও খেলা গড়াল না, চতুর্থ টেস্ট জিতে অ্যাসেজ পকেটে পুরে ফেললেন অ্যালিস্টার কুক৷ বেন স্টোকস, মার্ক উডদের দাপটে টিকতে পারলেন না অসি ব্যাটসম্যানেরা৷ সিরিজে ২-১ পিছিয়ে থেকে এই ম্যাচে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। অনেকেই মনে করেছিলেন এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, যা ইংল্যান্ডের ঠান্ডা পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলবে। কিন্তু, বাস্তবে হল তার উল্টোটা। অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কাটা প্রথম দিনই দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড। একাই তুলে নিয়েছিলেন ৮ ব্যাগি গ্রিন ব্যাটসম্যানকে। যার দৌলতে মাত্র ১৮.৩ ওভারে ৬০ রানেই গুটিয়ে যায় মাইকেল ক্লার্কের দল।
একটা ক্ষীণ আশা ছিল যে স্টার্ক-হ্যাজেলউড-জনসন সমৃদ্ধ অসি বোলাররা হয়ত ব্রডডের মতোই কিছু একটা করে দেখাবে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা যে গোটা অসি দলের মনোবলকে একেবারে তলানিতে এনে ঠেকিয়েছে, তা তাদের বডি-ল্যাঙ্গোয়েজে ফুটে উঠছিল। বলা যেতে পারে, প্রথম ইনিংসের ধাক্কা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ক্লার্ক-বাহিনী। ইংল্যান্ডের মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান জো রুটের শতরানের দৌলতে ৩৯১ রানে ডিক্লেয়ার্ড ঘোষণা করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক কুক। অস্ট্রেলিয়ার হারটা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
৩৩১ রানের বোঝা নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে অসিরা। দুই ওপেনার রজার্স-ওয়ার্নার চেষ্টা চালালেও, বাকিদের থেকে কোনও প্রতিরোধ আসেনি। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২৪১ রান তোলে অসিরা। কিন্তু, ততক্ষণে সাত ব্যাটমসম্যান প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন। তৃতীয় দিনের খেলা গড়াতেই মাত্র ১১ ওভারের মধ্যেই বাকি ৩ উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ২৫৩ রানে শেষ হয় যায় অসিদের ইনিংস। প্রসঙ্গত, শেষ সাত অ্যাসেজ সিরিজের মধ্যে পাঁচটি জিতেছে ইংল্যান্ড।
এদিকে, এই হারের পরই নাটকীয় সিদ্ধান্ত মাইকেল ক্লার্কের৷ অ্যাসেজের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি৷ গত সপ্তাহেই সিডনির একটি পত্রিকায় ৩৪-বছরের ক্লার্ক জানিয়েছিলেন, তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যেই থাকতে চান। কিন্তু, অ্যাসেজ-বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে ক্লার্কের ওপর চাপ বাড়ছিল। তাঁর নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ডে শেষ চারটি অ্যাসেজ সিরিজ হেরেছে। তাছাড়া, নিজের ব্যাটিং ফর্ম নিয়েও চিন্তায় ছিলেন এই বিশ্বকাপ-জয়ী অধিনায়ক। পরিসংখ্যান বলছে, শেষ ৩০ টেস্ট ইনিংসে মাত্র ৬ বার পঁচিশের গণ্ডি পেরিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরেই পিঠের ও গোড়ালির সমস্যায় ভুগছেন ক্লার্ক।
বস্তুত, ১১৪ টেস্ট ম্যাচ খেলে ৮,৬২৮ রান করেছেন ক্লার্ক। এর মধ্যে ২৮টি শতরানও করেছেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বজয়ী করার পরই একদিনের ও টি-২০ ক্রিকেটকে আলবিদা জানিয়েছিলেন ক্লার্ক৷”এবিপি আনন্দ




Discussion about this post