২০১২ সালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এক মাদরাসাছাত্রীকে (১৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় প্রদান করেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ডের’ অধ্যাদেশ জারির পর ধর্ষণ মামলায় দেশে প্রথমবার মৃত্যুদণ্ডের রায় এলো।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট নাসিমুল আকতার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন- সাগর চন্দ্র, সুজন মনি রিশি, রাজন, সঞ্জীত ও গোপী চন্দ্র শীল। এদের মধ্যে সঞ্জীত ও গোপী চন্দ্র কারাগারে থাকলে অন্য আসামিরা পলাতক আছেন।
এর আগে গেল মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ডের বিধান’ রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সংশোধনী এনে অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
অধ্যাদেশে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের মুহূর্ত থেকেই এটি আইনে পরিণত হয়।
গত সোমবার (১২ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতুদণ্ড’-এর বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’-এর খসড়া প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার।
এর পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার জনদাবি আসায় সেটি বিবেচনায় নিয়েছে সরকার।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারীর শ্লীলতাহানি, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে নববধূকে ধর্ষণসহ সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া নারীর ওপর ধর্ষণ-গণধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।
এরইমধ্যে আন্দোলনকারী বিভিন্ন ছাত্র ও অধিকার সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে ‘মৃত্যুদণ্ড’ করার উদ্যোগ নেয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯৭৫টি ধর্ষণকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। দেশে গড়ে মাসে শতাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
Discussion about this post