বিচারপ্রার্থী জনগণের কাছে তথ্য এবং সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট অনেক দূর এগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) ‘সুপ্রিম কোর্ট কজলিস্ট অ্যাপস’ গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি ও অ্যাপ ব্যবহার করে জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য- আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষার পাশাপাশি মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়ে জীবনমান উন্নত করা। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিচারপ্রার্থী জনগণের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট অনেক দূর এগিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (আপিল ও হাইকোর্ট) উভয় বিভাগের মামলার দৈনন্দিন কার্যতালিকা ও ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে জানার জন্য নির্মিত সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ কজ লিস্ট অ্যাপসটির উদ্বোধন। অ্যাপসটি ব্যবহার করে বিচারপতিগণ, আইনজীবীগণ, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, সাধারণ ব্যবহারকারীগণ, সর্বোপরি বিচারপ্রর্থী জনগণ সহজে অনলাইনে সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকা ও মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। অ্যাপসটি বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিচারপ্রার্থী জনগণের বিচারে প্রবেশাধিকারসহ ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার প্রক্রিয়ার সর্বস্তরে স্বচ্ছতা আনায়নের জন্য সুপ্রিম কোর্ট বদ্ধপরিকর। তাই অ্যাপসটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তথ্যপ্রযুক্তি শাখা ও অধস্তন আদালতের বিচারক মইন উদ্দিন নির্মাণ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বর্তমানে আপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চ, চেম্বারজজ আদালত এবং হাইকোর্ট বিভাগের ১৯টি দ্বৈতবেঞ্চ এবং ১৪টি একক বেঞ্চ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কাজ পরিচালনা করছে। দেশ-বিদেশ থেকে সুপ্রিম কোর্টের মামলায় শুনানিতে অংশ নেয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন, কিশোরগঞ্জের নদী-হাওর অঞ্চল এবং বিদেশে অবস্থান করেও বিজ্ঞ আইনজীবীগণ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুনানিতে অংশগ্রহণ করছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অ্যাপসটি হবে বিচারপ্রার্থী সাধারণ জনগণের। ঢাকায় না এসে তারা মামলা সার্চ করে এর হালনাগাদ ও ফলসহ সর্বশেষ তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন।
তিনি বলেন, এতে সুপ্রিম কোর্টে বিচারকাজ আরও স্বচ্ছ ও গতিশীল হবে। আমি গত কয়েকদিন পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপসটি ব্যবহার করেছি।’
‘এটি মোবাইল ফোনে ব্যবহারের জন্য উপযোগী একটি অ্যাপস। বিটিআরসির তথ্য অনুসারে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৬৭ মিলিয়ন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০৮ মিলিয়ন। সুতরাং আমি দৃঢ়ভাব বিশ্বাস করি বিজ্ঞ আইনজীবীগণ তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অতি সহজে অ্যাপসটি ব্যবহার করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের কাগজে ছাপানো দৈনন্দিন কার্যতালিকার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার জন্য অ্যাপসটি ব্যবহার করা সহজ হবে।’
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের সঞ্চালনায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post