বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সসহ অন্যান্য হত্যা মামলা দ্রুত সময়ের মধ্যে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিন উদ্দিন।
বুধবার (২৮ অক্টোবর,২০২০) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আপিল দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, শুধু রিফাত শরীফ নয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যত মামলা আছে। উভয় পক্ষের ( আসামি ও ভিকটিম) ন্যায় বিচারের জন্য দ্রুত আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় প্রস্তুতি নেবে।
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন হত্যা মামলা বিচারের জন্য রয়েছে, কোনটি পেপারবুক প্রস্তুত, আবার কোনটি পেপারবুক তৈরি হওয়ার পর শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। আমরা রিফাত শরীফ হত্যাসহ অন্যান্য সব মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও দ্রুত শুনানি হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেবো।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেন আদালত। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)।
Training on Land Documentation
এছাড়া এ মামলায় চার আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ডের গড়া কিশোর গ্যাং বন্ড গ্রুপ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ২ জুলাই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হন।
রিফাত হত্যা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে দুটি ভাগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১৪ জন শিশু আসামি।
অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিচার
গত ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়। বিচার শেষে গত ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বাকি তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
Discussion about this post