ডেস্ক রিপোর্ট
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাওদা বেগম হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র রাসেল মাতুব্বরের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনের ওপর আদেশের জন্যে সোমবার (২৩ নভেম্বর) দিন নির্ধারিত রয়েছে হাইকোর্টে । মামলাটিতে রায় ঘোষণার জন্যে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার শীর্ষে রয়েছে।
সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন-এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। রায় ঘোষণার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. মাসুদ রানা।এর আগে হাইকোর্টে আসা ডেথ রেফারেন্স ও আসামির করা জেল আপিলের বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্যে অপেক্ষমান রাখেন হাইকোর্ট।
২০১৫ সালের ১ জুন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাওদা হত্যা মামলায় এক ছাত্রকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন বরিশালের আদালত। মামলায় মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১ জুন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ মো. আনোয়ারুল হক এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় রায়ে।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল মিয়া মাতুব্বর ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে এ হত্যাকাণ্ডের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। তার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায়।

একই উপজেলার আব্দুল রাজ্জাকের মেয়ে নিহত সাওদা (২২) বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘প্রেমের সম্পর্ক রাখতে রাজি না হওয়ায়’ ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাওদাকে কুপিয়ে হত্যা করে রাসেল।আদালতের নথি সূত্রে জানা যায়, ওইদিন সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় সাওদার সঙ্গে রাসেলের তর্ক হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাওদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাসেল।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় সাওদাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ওইদিনই বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাওদা।
এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর রাতে সাওদার মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে রাসেল মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়।ঘটনার পর রাসেল পালিয়ে গেলেও এক সপ্তাহ পর ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার কলসিদিঘী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাসেলের ছাত্রত্ব বাতিল করে। এরপর ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন।মামলার একমাত্র আসামি রাসেল মিয়া এর আগে ১৬৪ ধারায় আদালতের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।
Discussion about this post