ডেস্ক রিপোর্ট
আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা বা দায়িত্ব অর্পণ করা তথা ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেয়া যাবে কিনা এবং পারিবারিক মামলায় দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোনো ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা সে প্রশ্নে চার অ্যামিকাস কিউরির (আদালত বন্ধু) মতামত শুনবেন হাইকোর্ট।
পারিবারিক আদালতে করা সিলেটের এক মামলায় ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ সংক্রান্ত বিষয়ে রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে গত সোমবার (১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চ চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দেন।
এরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট কামালুল আলম ও প্রবীর নিয়োগী।অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের সময় হাইকোর্টে বাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান। আর বিবাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ।

আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান বলেন, এই মামলার বাদী এক নারী তার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও সন্তানের ভরণ-পোষণের দাবিতে মামলা করেন। সে মামলায় লড়তে বিবাদী তার পক্ষে এক আত্মীয়কে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ করেন।
কিন্তু ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫ অনুযায়ী পারিবারিক মামলায় ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ নেয়ার বিধান নেই। ফলে সিলেটের পারিবারিক আদালত এই মামলার বিবাদীর ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ গ্রহণ না করে আদেশ দেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবাদী আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত সে আপিল খারিজ করে আদেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, বিচারিক আদালতের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিবাদী। এরপর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে ওই রিভিশন আবেদনের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। সে শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোন ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা সে প্রশ্ন উঠলে হাইকোর্টের সামনে ভিন্ন ভিন্ন রায় পরিলক্ষিত হয়।
একপর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে পাঠান। পরে প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করেন।
সে বেঞ্চে সোমবার (১ জানুয়ারি) রিভিশন আবেদনের শুনানির জন্য উঠলে হাইকোর্ট চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে আদালতের বন্ধু হিসেবে তাদের মতামত শুনতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।
Discussion about this post