ডেস্ক রিপোর্ট
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) কার্যনির্বাহী কমিটির ২০২১-২২ বর্ষের দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। ৭ হাজার ৭২২ জন আইনজীবীর মধ্যে প্রথম দিনে মোট দুই হাজার ৮২৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনী আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানানো হয়।
বুধবার (১০ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর পরে দুপুরে ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি দিয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট প্রদান করা হয়। এতে আজ দুই হাজার ৮২৩ জন ভোট দেন আইনজীবীরা। নির্বাচনে মোট ১৪টি পদের প্রতিটিতে একটি করে ভোট প্রয়োগ করছেন আইনজীবীরা। নির্বাচনী কেন্দ্রের ভেতরে মোট ৬১টি বুথে আলাদাভাবে ভোট দিয়েছেন তারা।
ভোটকেন্দ্রের বুথে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা কিংবা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে আবারও একই নিয়মে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন সংক্রান্ত সব ধরনের বিধি অনুসরণ করে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য ছাড়া এখানে অন্য কারও প্রচার প্রচারণা চালানোর সুযোগ কম।
তিনি জানান, ১৪ পদে হবে এ নির্বাচন। এর মধ্যে ৭টি সম্পাদকীয় পদ এবং ৭টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদ রয়েছে। দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং প্রত্যাহার শেষে ৫১ জন চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর মধ্যে ৭টি সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে ২৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সর্বোচ্চ পদ সভাপতি হিসেবে ৫ জন, দুটি সহ-সভাপতি পদের বিপরীতে ৬ জন, সম্পাদক পদে ৪ জন, কোষাধ্যক্ষ পদে ৪ জন এবং ২টি সহ-সম্পাদক পদের বিপরীতে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাকি ৭টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদের জন্য ২৪ জন আইনজীবী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক আরও জানান, বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) ভোটগ্রহণ শেষ হবে। এরপর ওই রাতেই ভোট গণনা করা হবে।
আওয়ামীপন্থী সাদা প্যানেল
এ নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতৃত্বে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে এবং অ্যাডভোকেট আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা এবং অ্যাডভোকেট মো. আলী আজম, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. ইকবাল করিম, সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার সাফায়েত সুলতানা রুমি এবং অ্যাডভোকেট নুরে আলম উজ্জ্বল, সদস্য পদে অ্যাডভোকেট মিন্টু কুমার মন্ডল, ব্যারিস্টার মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার মো. সানোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট এবিএম শিবলী সালেকীন, অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল হক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান রোমান।
মূল বিএনপিপন্থী নীল প্যানেল
অপরদিকে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমানকে সভাপতি পদে এবং সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রার্থী হয়েছেন।
এছাড়া দুটি সহ-সভাপতি পদে জয়নাল আবেদিন তুহিন ও জালাল আহমেদ, দুটি সহ-সম্পাদক পদে মাহমুদ হাসান ও রাশিদা আলম ঐশী, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব এবং সাতটি সদস্য পদে মনজুরুল আলম সুজন, শফিকুল ইসলাম শফিক, গোলাম মোহাম্মদ জাকির, পারভীন কাওসার মুন্নি, রেদওয়ান আহমেদ রানজিব, নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব ও ইফতেখার আহমেদ প্রার্থী হয়েছেন।

বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্যানেল
এই প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান খান এবং সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা এবং অ্যাডভোকেট সাবিনা ইয়াসমিন লিপি, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান সম্রাট, সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী জুনু এবং অ্যাডভোকেট মো. সুলতান মাহমুদ, সদস্য পদে অ্যাডভোকেট শাফিউর রহমান শাফি, মো. মুনির হোসেন, অ্যাডভোকেট একেএম মুক্তার হোসেন, অ্যাডভোকেট মহিত উদ্দিন জুবায়ের, আকবর হোসেন, ওয়ালিউর রহমান শুভ ও নাজমুল হাসান প্রার্থী হয়েছেন।
রেড (লাল) প্যানেল
এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে কে এম জাবির, সম্পাদক পদে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি পদে নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. বদিউজ্জামান তপাদার, সহ-সম্পাদক পদে মো. সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য পদে শহিদুল হক, এস কে এম আনিসুর রহমান খান, জহিরুল আলম বাবর প্রার্থী হয়েছেন।এছাড়াও দলের বাইরে থেকে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ।
Discussion about this post