ডেস্ক রিপোর্ট
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- সংসদীয় কমিটির এমন সুপারিশ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এমন পরিস্থিতিতেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনারের নেতৃত্ব দিলেন এক নারী এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার- ভূমি)।
রোববার (২৭ জুন) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা জেয়াদ আল মালুমের মরদেহে গার্ড অনার প্রদান করেন এসিল্যান্ড মারুফা সুলতানা খান হীরামনি। দুপুর ২টায় জানাজা শেষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বিকল্প চেয়ে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। কমিটি এক্ষেত্রে যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন, সেখানে কোনো পুরুষ দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করার কথা বলে।
পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদান দিনের বেলায় আয়োজনের সুপারিশ করা হয়। গত ১৩ জুন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এদিকে নারী ইউএনওকে বাদ দিয়ে পুরুষ দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়ার সংসদীয় কমিটির সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।

রিট আবেদনের শুনানিতে আদালত বলেছেন, বিষয়টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ মাত্র। এমন সুপারিশ গেজেট আকারে প্রকাশিত হলে তখন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়া হবে। তাই সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এ সময় রিটকারী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম আদালতকে বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মাঝে মাঝে এমন সব সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন যা শুনলে মনে হয় তারা ফতোয়া দিচ্ছেন। দিনে দিনে তারা ফতোয়া দেওয়া কমিটিতে পরিণত হচ্ছেন।
পরে আদালত রিট আবেদনটির শুনানি চার সপ্তাহ মুলতবির আদেশ দেন।মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফএলএডি)-এর আইন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে বিবাদী করা হয়েছে।রিট আবেদনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ কেন বৈষম্যমূলক, বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
Discussion about this post