বিডি ল নিউজঃ “ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, বাট ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।” এমনটা ক্রিকেটে আমরা সচরাচর বলে থাকি এবং বিশ্বাসও করে থাকি। কিন্তু, সবাই এই ফর্মকেই প্রাধান্য দেয়। ফর্ম ছাড়া এক দুই ম্যাচ দলে নেওয়া গেলেও বিশ্বকাপের মত বড় আসরে ফর্মই প্রথম সম্পদ। আব্দুর রাজ্জাক ২০০৪ সাল থেকে জাতীয় দলের ভার বহন করে চলছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফিটনেস এবং ফর্ম ভাল নয় এমন অভিযোগে তাকে (রাজ্জাক) দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন বিশ্বকাপে রাজ্জাকের অন্তর্ভুক্তিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাদের মধ্যে একজন সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এতগুলো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা যার ঝুলিতে তাকেই দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ফিটেনেসের কথা বলে। রাজ্জাককে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘রাজ্জাক বাংলাদেশ ক্রিকেটকে লম্বা সময়ের জন্য সার্ভিস দিয়েছেন। তার ক্যারিয়ার শেষ, এটা বলা যায় না। কিন্তু তার ফিল্ডিং ও ফিটনেস বিবেচনায় তাকে দলে রাখা হয়নি।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মাঠগুলো অনেক বড়, সেখানে আমাদের দ্রুতগতির ফিল্ডার প্রয়োজন। তাছাড়া সামনের বছর আমাদের অনেকগুলো খেলা রয়েছে, সেখানে এখন যারা বাদ পড়েছেন তাদেরও সুযোগ হতে পারে। আমার বিশ্বাস রাজ্জাক ফিটনেসের উন্নতি করে দলে জায়গা করে নেবে।’
এদিকে সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল রাজ্জাককে দল থেকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এখনই রাজ্জাককে দল থেকে বাদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না বলে অভিমত দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘অভিজ্ঞতা বিবেচনা করার প্রয়োজন ছিল বিশ্বকাপ দল ঘোষণার ক্ষেত্রে। এখানে রাজ্জাকের অন্তর্ভুক্তিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। রাজ্জাক সব সময়ই পাওয়ার প্লেতে বল করে; সেখানে ও (রাজ্জাক) বরাবরই সফল বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে রাজ্জাকের অভাব অনুভব করবে।’
শুধু রাজ্জাক নয়, বাংলাদেশ দলে সিমিং অলরাউন্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমানকে পছন্দ আমিনুল ইসলাম বুলবুলের।এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে একজন সিমিং অলরাউন্ডার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে ক্ষেত্রে নির্বাচকরা জিয়াউর রহমানকে বিবেচনা করতে পারতেন।’ মিডল অর্ডারে আরেকজন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান রাখা উচিত ছিল। এ ক্ষেত্রে প্রিমিয়ার লিগে নাঈম ইসলাম ভাল করার পরও দলে সুযোগ না পাওয়ায় আমি হতাশ হয়েছি।’
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেলেন না, এটা কি ভেবেছিলেন। এমন প্রশ্নে আব্দুর রাজ্জাক দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, ‘আসলে বিষয়টি নির্বাচকদের হাতে। নির্বাচকরা যেভাবে ভাল মনে করেছেন সেটাই করেছেন। আর বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন সব ক্রিকেটারেরই থাকে। আমারও ছিল। কিছুটাতো হতাশই। লিগে বল ভালই হয়েছে, সে হিসেবে ভেবেছি হয়তো সুযোগ মিলতে পারে।’ কথার মাঝে কিছুটা ক্ষোভ ঝরেছে আব্দুর রাজ্জাকের কণ্ঠে। এত তাড়াতাড়ি তাকে বুড়োদের কাতারে ফেলে দেওয়ায় হতাশ তিনি। রাজ্জাক বলেছেন, ‘প্রথমে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল; আমি দলে নেই।’ তবে হতাশ হলেও থেমে থাকতে চান না তিনি। সামনে জাতীয় লিগ সেখানে মনোযোগ দেবেন অভিজ্ঞ এ বাহাতি স্পিনার।
Discussion about this post