বিডি ল নিউজঃ সারাদেশে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বিশেষ সভার একদিন পরই আজ বৃহস্পতিবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে সরকার। সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যকরী সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল উপস্থিত রয়েছেন।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সভাপতিত্বে বুধবারের বৈঠকে অবরোধের সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর সমালোচনা করা হয় বলে জানা গেছে।
ওই বৈঠকে কয়েকজন মন্ত্রী চ্যানেলগুলোর গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বারবার দেখানো, একদিন আগের নিউজ একদিন পরে তাজা খবর হিসেবে দেখানো হচ্ছে উল্লেখ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত তথ্যমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
এ পরিস্থিতিতে চ্যানেল মালিকদের সঙ্গে জরুরিভিত্তিতে সভা ডেকেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ বলেন, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম জনজীবন, সামাজিক জীবন এমনকি রাষ্ট্রীয় জীবনকে প্রভাবিত করে। গণমাধ্যমের ভূমিকা ও আমাদের কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করবো।
তিনি বলেন, টেলিভিশন সংবাদে মানুষ উজ্জীবিত হয়, টেলিভিশন গণতান্ত্রিক উন্নয়নেও ভূমিকা পালন করে আসছে। টেলিভিশনের ভুল সংবাদ মানুষের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
‘গতকালের সংবাদ ২৪ ঘণ্টা পর আপডেট করে তাজা খবর হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। বাসি খবরকে এভাবে তাজা বানালে মানুষের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে’ বলেন মরতুজা আহমেদ।
তথ্যমন্ত্রী জানান, টেলিভিশন মালিকদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে এ বৈঠক হচ্ছে। এরপরই সভাকক্ষে অবস্থানরত সংবাদিকের বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে তথ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পরে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করবেন বলেও জানান।
সভায় বৈশাখী টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মাছরাঙ্গা টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, সময় টিভির চিফ এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা আহমেদ জুবায়ের, চ্যানেল আই বার্তা প্রধান প্রণব সাহা, এশিয়ান টিভির চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ, চ্যানেল একাত্তর এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবুসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠখ শেষে জনা গেছে সভায় সন্ত্রাস, সহিংসতা ও নাশকতা প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সকল ইলেকট্রনিক মিডিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিএনপির ডাকা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির সন্ত্রাস, নাশকতা ও সহিংসতা সহায়ক খবরও প্রচার না করার অঙ্গীকার করেছে তারা।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও নাশকতা চালিয়ে সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। সন্ত্রাস এবং নাশকতা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। নাশকতা মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারে না।’
জাতীয় জীবনে বিবেকের তাড়নায় সন্ত্রাস, সহিংসতা ও নাশকতা প্রতিরোধে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মালিক ও কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারের এই সিনিয়র মন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের নামে সহিংসতা কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে বৈঠকে উপস্থিত সবার সহযোগিতা চাই।’
বৈঠকে মনজরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘আমরা সহিংসতার রাজনীতির পক্ষে নই। আমরা সুস্থ ধারার রাজনীতির পক্ষে। সহিংসতা-সন্ত্রাস ও রাজনীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না।’
অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি ভবিষতের জন্য ক্ষতিকর। আমরা সরকারের পাশাপাশি সব নাশকতা প্রতিরোধ করবো ঐক্যবদ্ধভাবে।’
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নাশকতা প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বৈঠকে উপস্থিত সব ইলেট্রনিক মিডিয়ার মালিক ও কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সূত্রঃ আমার দেশ




Discussion about this post