মীর মাহফুজুর রহমান:
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন বিল ২০১৩’ পাস হওয়ায় বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে। নতুন আইনের বিধান অনুযায়ী ‘জনবহুল’ বা ‘প্রকাশ্যে’ ধূমপানের জন্য ৩০০ টাকা জরিমানার বিধান করা হলেও এতে রয়েছে বড় ধরনের ফাঁকি। কারণ ‘জনবহুল স্থান’ বা ‘পাবলিক প্লেস’ বলতে অনেক কিছুর উল্লেখ করা হলেও এর সংজ্ঞায় সুকৌশলে ফুটপাথ ও পার্কসহ কোনো উন্মুক্ত স্থান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থাৎ ফুটপাথ ও পার্কসহ যেকোনো উন্মুক্ত স্থানে অবাধে ধূমপান করতে বাধা নেই। বাংলাদেশের সব শহরের রাজপথ বা ফুটপাথ জনবহুল। তাই এসব স্থানে ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি বা ধাক্কাধাক্কি করে চলাফেরা করতে হয়। প্রায় সময়ই লক্ষ করা যায়, বয়স্ক লোক ছাড়াও ছেলে বা নাতির বয়সী তরুণেরা প্রবীণদের সামনেই অবজ্ঞাভরে বা বেপরোয়াভাবে সিগারেটের ধোঁয়া ইচ্ছেমতো ছাড়ছে, যা অন্যদের মারাত্মকভাবে বিব্রত করে থাকে। ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ঊর্ধ্বলোকে ধোঁয়া নিক্ষেপ করা তো অনেকেরই ফ্যাশন। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সতর্কবাণী লিপিবদ্ধকরণ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এতে কোনো ফায়দা হয়নি সংশোধিত আইন প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর। বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করতে হয় এ কারণে যে, সাতক্ষীরা জেলায় তার নিজ এলাকায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাননি, গিয়েছেন অনেক পরে।
সংশোধিত আইনে ধূমপানের জন্য ৩০০ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হলেও যখন আমরা দেখি, খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন, তখন আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ জাগে। তা ছাড়া যেসব আবদ্ধ স্থান বা প্রতিষ্ঠানে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কদাচিৎ গমন করে থাকেন। তাহলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন কার্যকর হলো কি না, তা দেখবে কে?
Discussion about this post