বিডি ল নিউজঃ

যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।
মামলাকে মিথ্যা এবং চক্রান্তমূলক দাবি করে রবিবার এক বিবৃতিতে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার হিংস্রতার ও অমানবিকতার যে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা হলো পুত্রশোকে কাতর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
রিজভী বলেন, কতখানি নিষ্ঠুর ও বিবেকশূন্য হলে একটি সরকার এই জঘন্য অপকর্মটি করতে পারে তা দুনিয়াতে মনে হয় নজীরবিহীন। এই ভোটারবিহীন সরকার মনুষ্যত্বের সকল বৈশিষ্ট্যগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়েছে।
তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার ও তাদের আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনে প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। ২০০৭ সালের মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের দিনই কোকোকে আটক করে। আটকের পর তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। এই অত্যাচারেই গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হন আরাফাত রহমান কোকো।
‘এরপর আওয়ামী মহাজোট সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করতে থাকে কোকোর বিরুদ্ধে। মায়ের কাছ থেকে সন্তান ও সন্তানের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনের ফলে অসুস্থতায় ভুগতে ভুগতে গতকাল আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন’ যোগ করেন বিএনপি মুখপাত্র।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারকে ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস করার একটি মাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে এক ব্যক্তির একক রাজত্ব চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দূর করা।
রিজভী বলেন, ‘কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করতে আসাটাকে আমরা ইতিবাচক অর্থেই গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় এটা সুস্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতি জানাতে আসাটা ছিল নিছকই ছলনা, কুমিরের কান্না।’
প্রসঙ্গত, যাত্রবাড়ীতে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। পরে রাতে সাড়ে ৮টায় খালেদাকে সমবেদনা জানাতে তার গুলশান কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক বিরোধীদের গভীর শোকের সময়ও তাদের বিরুদ্ধে নিজের অন্তরের বিদ্বেষ-বিষ দুরীভূত করতে পারেননি। বেগম জিয়াকে কারাগারে বন্দির নীল নকশা তারা অনেক দিন ধরেই এঁটে আসছে। তাকে আটকের জন্যই একের পর এক পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।’
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘সরকারী এজেন্টরাই এই নাশকতাগুলো করছে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই উদ্দেশ্যটা হচ্ছে গণবিরোধী ভোটারবিহীন সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়া।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, তাকে এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের, ছেলেদেরকে মায়ের কাছ থেকে দূরে রাখতে বাধ্য করাসহ এমন কোনো উৎপীড়ণের পন্থা নেই যা এই অবৈধ সরকার অবলম্বন করেনি।’
রিজভী দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, ‘এই অবৈধ অপশক্তির কোনো অশুভ পরিকল্পনাই ফলপ্রসূ হবে না। জনগণ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ-হরতাল অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে।’




Discussion about this post