হাসান মুরসালিন, বিডি ল নিউজ: টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনামুল হক (জামায়াত নেতা) ও উচ্চমান সহকারী মুনসুরুর রহমানের টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে নানান অপকর্মের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সম্মিলিতভাবে যথাযথা কর্তৃপক্ষে বরাবরে বার বার অভিযোগ করা সত্বেুও ঐ জেলা শিক্ষা অফিসার ও উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে কোন পদেক্ষেপ না নেওয়ায় টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকগণ মানববন্ধন করে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষকগণ উক্ত জেলার জেলা শিক্ষা অফিসার এনামু হক’র বদলীর দাবিসহ উচ্চমান সহকারী মনসুরুর রহামানেরও বদলীর জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন টাঙ্গাইল জেলা অফিসে কর্মরত এনামুল হক ও উচ্চমান সহকারী মুনসুরুর রহমান বিভিন্ন অনিয়ম অনাচার. হয়রানী এবং অর্থলিস্পাসহ অনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন তারিখ সময় ও স্থানে বিভিন্ন ঘটনার সুত্রপাত ঘটান তারা দুজনে মিলে। তৎপরিপেক্ষিতে ইতি পূর্বে বিভিন্ন দফতরে তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষকগণ নিরুপায় হইয়া অভিযোগ করেছে। কোন প্রতিকার না পাওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসার ও উচ্চমান সহকারীর অনিয়ম ও দুনীতি দিন দিন আরো বাড়তে থাকে। তার ফলশ্রুতিতে জেলা স্থানীয় সংবাদ কর্মীগনের সহযোগিতায় স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশ হয়। এতদসত্বেও শিক্ষা অফিস ও অফিসারের দুর্নীতির কোন পরিবর্তন হয় নাই।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা অফিসারের বদলীর জন্য সুপারিশ সত্বেও কোন প্রকার সুরাহ না হওয়ায় আজকের এই মানববন্ধন বলে উল্লেখ করেন কালিহাতি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।
মানববন্ধনে শিক্ষা অফিসার ও উচ্চমান সহকারী বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয় তন্মদ্ধে উল্লেখ যোগ্য বিষয় গুলো তুলে ধরা হলো।
১.বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষকদের যে কোন কাজ উনার টেবিল গেলে গড়িমসি করে ব্যস্ততা দেখিয়ে দিনের পর দিন ওনার টেবিলে আটকে রাখেন এবং অফিস সহকারী মুনসুরুর রহমানের মাধ্যমে ফাইল প্রতি ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকেন।
২. বর্তমান ডিপিইও ১৯৯৭-৯৯ দীর্ঘ তিন বছর ভুয়াপুর উপজেলার টিও ছিলেন তখন মুনসুরুর রহমান ছিলেন অফিস সহকারী। তারা দুই জনে মিলে শিক্ষকদের নিকট থেকে বিভিন্ন কৌশলে হাজার হাজার টাকা আদায় কারেছেন। দুই জনের বিরুদ্ধে ভুয়াপুরের শিক্ষকগণ আন্দোলন শুরু করেন এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দাখিল করলে তিনি বদলী হতে বাধ্য হন।
৩. বর্তমানে দুই জন টাঙ্গাইল ডিপিইও অফিসে পূর্বের নিয়ম অনুস্বরন করে নিরিহ শিক্ষকদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা আদায় করছে। যা তদন্ত স্বাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে।
৪. টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষিকার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য অফেরতযোগ্য অগ্রিমের আবেদন করেন। যা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ডিলিং স্টাফ যথা সময়ে ফাইল উপস্থাপ করেন কিন্তু ডিপিইও গড়িমসি করে তা ১৫ দিন পর অনুমোদন দেন। ফলে ওই সহকারীর শিক্ষকের মেয়ের বিয়ে সুষ্ট ভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি।
৫. চিকিৎসা বাবদ অফেরতযোগ্য অগ্রিমের জন্য আবেদন করলে ডিপিইও এর টেবিলে দীর্ঘ ১মাস পড়ে থাকে।
৬. শিক্ষকদের পরীক্ষা অনুমতি, ইবিক্রস, প্রশিক্ষন প্রাপ্ত স্কেল পিআর এল পাওয়ার ক্ষেত্রে একই বিড়ম্মনা এবং ডিপিইও কে দিতে হয় হাজার টাকা।
৭. শিক্ষকগণ ওনার সহিত স্বাক্ষাত করতে গেলে স্বাক্ষাত না পেয়ে ফিরে আসতে হয় কারন ওনি অফিসে আসে ১০ টার পরে এবং দুপুর ২টার আগেই অফিস ত্যাগ করেন।
অভিযোগ সংক্রান্ত অনুলিপি মহামান্য রাষ্ট্রপতি-বাংলাদেশ, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মাননীয় সচিব-প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় চেয়ারম্যান-দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা বরাবরের দাখিল করেও কোন সুরাহা না পাওয়ায় আজকের এই মানববন্ধন বললেন বক্তারা।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আজকের এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কালীহাতি উপজেলার শিক্ষক সফিকুল ইসলাম, বাসাইলের আব্দুল আওয়াল সিদ্দিক ঘাটাইল এর শিক্ষক রাতুল, সাজেদা খাতুন, গোপাল পুরের আবদুল আজিজ, সোলায়মান হোসেন, ও মির্জাপুর উপজেলার শিক্ষক মোঃ খাদেম প্রমূখ।
Discussion about this post