বিডি ল নিউজঃ পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া যাওয়ার পথে পদ্মা নদীতে আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এমভি মোস্তফা নামের যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত ৬ শিশুসহ ৩১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার দুপুর পৌনে ১২টায় এমভি নারগিস নামে সারবাহী একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় ‘এমভি মোস্তফা’ নামের ওই লঞ্চটি। লঞ্চটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে ৫০-৬০ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া ৩১ লাশের মধ্যে ৬ শিশু, ৮ নারী ও ১৭ জন পুরুষ। তাদের কারোই পরিচয় জানা যায়নি।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ১৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আরও চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন লাইলি বেগম (৬৫), মো. ইমরান (৮), মো .সেলিম (২২) ও নাসিরউদ্দিন (৪০)। উদ্ধার হওয়া লাশগুলো পাটুরিয়া ঘাটে নেওয়া হচ্ছে। স্বজনদের কন্টোলরুমে যোগাযোগ করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
পাটুরিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল মুকতাদির জানান, এমভি নারগিস নামে সারবাহী একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি মাঝ পদ্মায় ডুবে যায়। যাত্রীদের উদ্ধারে নৌ-পুলিশের পাশাপাশি রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও উদ্ধারকারী জাহাজ (আইটি-৮৩৮৯) কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৫০-৬০ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিরা সাঁতরে তীরে উঠেছেন। ডুবে যাওয়া লঞ্চটি শনাক্ত করে তার চারদিকে ছোট নৌকা ও রশি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার করার পর এক শিশুকে উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। উদ্ধার করা লাশের কোনোটিরই পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টি এস কেএম তারিকুল ইসলাম জানান, আহত অবস্থায় এক শিশুকে আনার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। মানিকগঞ্জের ঘিওর ফায়ার সার্ভিস অফিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর জিহাদ মিয়া জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ৩৫-৪০ ফুট গভীরে রয়েছে। লঞ্চের সামনের দিকটা রয়েছে নিচের দিকে।
দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চ থেকে সাঁতরে উদ্ধার পাওয়া যাত্রী বিমল চন্দ্র মণ্ডল, তাপস কুমার দাস ও তার বন্ধু আখতার মোল্লা জানান, এমভি মোস্তফা লঞ্চে করে তারা ফরিদপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। মাঝ নদীতে পৌঁছানোর পর বাম দিক থেকে এসে কার্গো জাহাজটি তাদের লঞ্চকে ধাক্কা দেয়। এতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডান দিকে কাত হয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল বলেও জানান তারা।
লঞ্চডুবিতে রাজবাড়ী শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অসীমা নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মী ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান। এদিকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার তাপতুন নাসরিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।




Discussion about this post