বিডি ল নিউজঃ মেলবোর্নে শুক্রবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সঙ্গে ছিলেন দ্য অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকার ভাষার বৃহস্পতিবার শ্রীলংকার বিরুদ্ধে খেলার মূল খলনায়ক (দ্য চীফ ভিলেন!) এনামুল বিজয় আর মমিনুল হক শুভ। বৃহস্পতিবারের ম্যাচ বাংলাদেশের হাত ফসকানোর অন্যতম ভিত্তি স্থাপনকারী দুই সদস্যকে হয়তো কোন বিশেষ উদ্দেশ্য ছাড়াই নামাজসঙ্গী করেছিলেন মাশরাফি।
কিন্তু সেখানে তাদের জন্যে বিব্রত হবার মতো একটি ঘটনা ঘটেছে! বৃহস্পতিবারের ম্যাচে দলের বাজে পারফরমেন্স নিয়ে কতিপয় ক্ষুব্দ প্রবাসী বাংলাদেশির জেরার মুখে পড়েন বাংলাদেশের কাপ্তান।
এ ঘটনায় বিব্রত হতভম্ব হন ঘটনাস্থলে উপস্থিত আর কয়েক প্রবাসী। দল খারাপ বা হতাশাজনক কিছু করুক বা নাই করুক, এ মূহুর্তে বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোকে সামনে রেখে দলকে তারা কোন অবস্থায় হতদ্যম, বিব্রত করতে রাজি না। দল নিয়ে তাদের এখনও অনেক আশা-স্বপ্ন।
সূত্রগুলোর মতে শুক্রবার মাশরাফি সহ দলের কয়েক সদস্য মেলবোর্ন শহরতলীর হান্টিংডেল মসজিদে জুমার নামাজে গেলে নজরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের জেরা শুরু করেন। নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন শ্রীলংকার সঙ্গে খেলার আগেরদিন বাংলাদেশ দলের সদস্যরা অনুশীলনে অংশ না নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে! এরজন্যে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স দেখিয়েছে টিম বাংলাদেশ! তিনি তার এ প্রতিবাদে আরও কয়েক প্রবাসীকে ডেকে আনেন। মাশরাফি এ সময় বলেন, বাংলাদেশ টিমের সবাই অনুশীলন করেনি, এটা ঠিক নয়। আর অনুশীলন বাধ্যতামূলকও নয়। এ নিয়ে কথাবার্তা, জেরা-বাদানুবাদের পর্যায়ে গড়ালে মাশরাফি সহ খেলোয়াড়দের সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম এ ব্যাপারে বিডিনিউজকে বলেন বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেনের মর্যাদা বহাল রেখে তিনি তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন ক্যাপ্টেন তার সঙ্গে রুঢ় আচরন করেছেন। রুঢ় আচরন বলতে কী বোঝানো হচ্ছে তা অবশ্য খোলাসা করে বলেননি তিনি। বলেছেন ‘মাশরাফি আমার ছেলের বয়সী। সে অভিযোগ করে বলেছে, আমি তার নাম ধরে ডেকেছি, কথা বলেছি’।
এদিকে হান্টিংডেল মসজিদের ঘটনা জানাজানি হলে প্রবাসী কমিউনিটিতে তা তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কুদরত হোসেন নামের এক প্রবাসী তরুন ফেসবুকে লিখেছেন, মাশরাফির সঙ্গে যারা দূর্ব্যবহার করেছে তাদের পরিচয় জানা দরকার।
সেই মসজিদে নামাজে ছিলেন এমন একজন প্রবাসী ডা শাহেদ বিডিনিউজকে বলেন, নামাজ থেকে আগে আগে বেরুনোয় তিনি ঘটনা দেখেননি। তবে ঘটনা শুনে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। কারন এই মূহুর্তে টিম বিব্রত-আপসেট হতে পারে এমন কিছু কারো উচিত নয়।
ডা শাহেদ বলেন, নজরুল ইসলামকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তিনি একজন ক্রিকেট অনুরাগী। তামিম চিকিৎসার জন্যে মেলবোর্ন আসার পর তার বাসাতেই তাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল। তাই তার উদ্যোগেই ঘটনাটি ঘটায় তা তিনি মেলাতে পারছেন না।
মেলবোর্ন প্রবাসী বিশিষ্ট কবি ও লেখক আহমেদ শরীফ শুভ, বাংলাদেশ দল বিব্রত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন আচরন আর কেউ না করতে প্রবাসী কমিউনিটকে আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান দৈনিক দ্য অস্ট্রেলিয়ানের শুক্রবারের সংখ্যায় বৃহস্পতিবারের এমসিজির ম্যাচে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনের লড়াকু ভূমিকার ভূয়শী প্রশংসা করা হয়েছে। মাশরাফিকে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ উল্লেখ করে রিপোর্টে, তার শুরুর দিকে ০৬-০-২০-০ ইনিংসটির ভূয়শী প্রশংসা করা হয়। রিপোর্টে এনামুল বিজয়কে খেলার ‘চীফ ভিলেন’ উল্লেখ করে বলা হয়, এনামুল যখন থ্রিমানের ক্যাচ ফেলেন তখনো রানের খাতা খোলেননি শ্রীলংকান এই অপেনার।
সাঙ্গাতকারার ৪০০ তম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি উপহার দিতে বাংলাদেশি ফিল্ডাররা তাকে দু’দফা জীবন দেয়। এরপর দিলশান-সাঙ্গাতকারার এমসিজির বিশ্বকাপ ইতিহাসের তৃতীয় দীর্ঘ পার্টনারশীপে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে শ্রীলংকা ম্যাচের আন্ডারডগ বাংলাদেশ!
ফজলুল বারী, মেলবোর্ন থেকে
সূত্রঃ হ্যালো টুডে
Discussion about this post