একে.এম নাজিম,হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, বিডি ল নিউজঃ হাটহাজারী মডেল থানায় ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারীর পর থেকে হরতাল অবরোধ, জ্বালাও পোড়াও সহ বিভিন্ন স্থানে গাড়ীতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাংচুর ও নাশকতার সরঞ্জাম উদ্ধারের ঘটনায় বিএনপি,জামায়েত ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে পাঁচটি মামলা। এ পর্যন্ত পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে ৩ জন এবং আহত হয়েছে প্রায় ৩০ জনের অধিক।
এই ৫টি মামলায় সুনির্দিষ্ট ৮২জনকে আসামী করা হলেও অজ্ঞাতনামা আসামী রয়েছে ৫০০ জনের মত। এসব আসামীদের মনে নানা অজানা আতংক দেখা দিয়েছে। অজ্ঞাত আসামীর চেয়েও নামী আসামীদের আতংক আরো বেশী। কখন কোন সময় এসব আসামীরা পুলিশের হাতে আটক হয় তা নিয়ে সংশয় বিরাজ করছে তাদের মাঝে । এতে করে বর্তমানে হাটহাজারীতে বিশেষ করে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে এ আতংক দেখা দিয়েছে। রাত ৮ টার পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা গুলো পুরুষ শুন্য হয়ে পরে। ফলে দোকান মালিকরাও পড়েছে বিপাকে।
এদিকে ৫টি মামলার আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত পক্ষে ৬০জনের অধিক। আসামীদের মধ্যে বিত্তশালীরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিলেও অপেক্ষাকৃত গরীবরা পলাতক রয়েছে। তাছাড়া পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে অনেক আসামী বিদেশে পাড়ি দিয়েছে বলে জানা গেছে। এমন কি বহু নেতা জায়গা বেঁচে বিদেশ চলে যায়।
একাদিক সূত্রে জানা যায়, বিএনপির কর্মীরা অর্থের অভাবে আইনজীবির ফি দেওয়ার মত তাদের সামর্থ্য নেই। ফলে নেতারা কোনঠাষায় পরে আছে। বিএনপি নেতার কোনঠাষার কারণে কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তারা এখন মিটিং মিছিল গুলোতে যোগ দিচ্ছে না। এমনকি হাটহাজারীতে ২০ দলীয় জোটের কোন মিছিল মিটিং করতে পারছেনা। নেতারা আত্তগোপনে থাকায় কর্মীরা মাঠ ছেড়ে গেছে। অপরদিকে জামায়েত কর্মীরা বর্তমানে প্রায় এলাকা ছাড়া। তবে কয়েকজনের চেহারা দেখা গেলেও তারা মূলত সক্রিয় নয়।
এ মামলা গুলোর প্রধান আসামী হাটহাজারী উপজেলা জামায়েতের আমীর ও বিএনপির কয়েকজন সক্রিয় নেতা বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিএনপি জামায়েতের ডাকে অবরোধ-হরতালে গাড়ী ভাংচুর ও জ্বালাও পোড়াও এর ঘটনায় বিএনপি জামায়েতের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হাটহাজারী মডেল থানায় দায়ের করা হয়। তার মধ্যে জামায়েত ও বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছে।
৫টি মামলা গুলোর মধ্যে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকায় সবজি বাহী মিনি ট্রাক আগুন দেওয়র ঘটনায় এস.এই জসিম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন মামলা নং(৮)তাং ০৫.০১.২০১৫ উক্ত মামলায় সুনির্দিষ্ট ১৫জনকে আসামি করা হলেও অজ্ঞাত আসামী রয়েছে ১২০ জনের অধিক।
এদিকে এস.আই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নাশকতার কাজে ব্যবহাত বিস্কোরক দ্রব্য একটি মামলায় সুনির্দিষ্ট ভাবে ১০জনকে আসামী করা হয়। এই মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয় ১০/১৫ জন।
অন্যদিকে হাটহাজারী বাসষ্টেশন এলাকায় বিএনপি জামায়েত কর্মীরা এলোপাতাড়ি ভংচুরের ঘটনায় এএস আই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে সুনির্দিষ্ট ১০জনকে আসামী ও অজ্ঞাত ২০/২৫জনকে আসামী করে হাটহাজারী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং(১৮) তাং ১৮.০১.২০১৫ এই মামলায় হাটহাজারী সদর ইউ.পি র’ সাবেক চেয়ারম্যানের বড় পুত্র ছাত্র দল নেতা আকরামুল হক পাবেলকে প্রাধান আসামী করা হয়।
চারিয়া এলাকায় সিএনজিতে পেট্ট্রোল বোমা নিক্ষেপ এর ঘটনায় উক্ত সিএনজি চালকসহ সাবের ও রণজিত নামের দুজনের মৃত্যু হয় এ ঘটনায় এস.আই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং(১৩) তাং ০৫.০৩.২০১৫ এই মামলায় ৩৩ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামী ও অজ্ঞাত ১০/১৫জনকে আসামী করা হয়। এ ঘটনায় মির্জাপুর চারিয়া এলাকা থেকে অন্তত ৩০জনকে আটক করেছে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ।
অপর একটি ঘটনায় এএস.আই মাহাফুজুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং(৩১) তাং ২৩.০২.২০১৫ এ মামলায় মোট ১৪জনকে আসামী করা হয়। এদিকে হাটহাজারী পেট্ট্রোল বোমায় নিহত হয় নাঙ্গলমোড়া এলাকার আলমগির, এনায়েতপুর এলাকার রণজিত নাথ, ফটিকছড়ি এলাকার সিএনজি চালক সাবের হোসেন।
বর্তমানে হাটহাজারী মডেল থানায় গত ২ মাসের মধ্যে ৫টি জ্বালাও পোড়াও সরকারী কাজে বাধা দেওয়াতে মামলা হয়। এ ৫টি মামলাতে মোট ৫০০ জন অজ্ঞাত আসামী করা হয়। তবে তাদেও মধ্যে পুলিশ আটক করেছে মাত্র ৫০ জনকে। অপরদিকে সাম্প্রতিক ২০ দলের অবরোধ ও তার সাথে রয়েছে বোনাস, হরতাল চলাকালে ভাংচুর, জ্বালাও পোড়াও। হাটহাজারী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ২০ দলের নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। এসব আসামীরা গ্রেফতার আতংকের ভয়ে গ্রাম ছাড়া হয়। যার ফলে অনেক এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে যাওয়ার ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘটছে ছোটখাট চুরির ঘটনা। এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, পুলিশের গ্রেফতার আতংকের ভয়ে এলাকার ফাঁকা মাঠ পাওয়ার কারণে চোরের দল চুরি করার সুযোগ পাচ্ছে।
Discussion about this post