
ডেভিড মিলার স্তব্ধ হয়ে গেলেন। না, আইপিএলে নিজের টিমের বিপর্যয়ে নয়। ওটা অনেক দিন আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
ডেভিড মিলার স্তব্ধ হয়ে গেলেন তাঁর ছক্কার চোটে কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে শুনে। যে খবর প্রথম আনন্দাবাজারে বেরিয়েছিল। যা বিদেশেও তোলপাড় ফেলে দেয়। বিদেশি কাগজ খবরটা করেও। এবং মিলারের কাছে যা পৌঁছলে প্রবল ভেঙে পড়েন তিনি। এ রকম যে হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার যেন বিশ্বাসই করতে পারেননি। ইংল্যান্ডের ডেইলি মেল-কে মিলার বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। এটা সত্যি না হলেই ভাল হত। মিস্টার আইচের অপূরণীয় ক্ষতির জন্য আমি দুঃখিত। আশা করি উনি দ্রুত সেরে উঠবেন।’’
গত ৯ মে ইডেনে কেকেআর বনাম কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচে ‘জি’ ব্লকের আপার টিয়ারে ছিলেন অলোকবাবু (৫৩)। সে দিন খেলা শুরু হয় বিকেল চারটেয়। পঞ্জাবের ইনিংসের শেষ ওভারে বল করতে আসেন কেকেআরের অ্যান্ড্রু রাসেল। প্রথম বলটাই মিলার রাসেলকে মারেন লং অফ-এ। প্রচণ্ড গতিতে বলটি অলোকবাবুর চোখে লাগে। তাঁকে প্রথমে সিএবি-র মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আলিপুরের এক হাসপাতালে। কিন্তু তাঁর ডান চোখ বাঁচানো যায়নি। চোখের গুরুতর চোট দেখে শেষ পর্যন্ত তা বাদ দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
এখন কেমন আছেন তিনি? অলোকবাবুর স্ত্রী রেণুকা আইচ রবিবার বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে এসেছি। এক সপ্তাহ পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা।’’
আর ‘ডিউটি’ করতে গিয়ে যার এক চোখের আলোই নিভে গেল, তিনি বলেন, ‘‘আমার জীবনে এখন কোনও কাজ নেই। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত।’’ পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটার উপর হঠাৎ নেমে আসা এই বিপর্যয়ে অজানা ভবিষ্যতের আশঙ্কায় দুলছে অলোকবাবুর পরিবারও। রেণুকাদেবী বললেন, ‘‘হাতে একটাও পয়সা নেই জানেন। আমাদের ভবিষ্যৎ কী, জানি না। এখন আমার ছেলে রানার চাকরি হলে ও মনের জোর পাবে। না হলে যে কী হবে!’’
সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা
Discussion about this post