প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছ থেকে ইতোমধ্যে সেই নির্দেশনা পেয়েছেন বলে বেসরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার জানিয়েছেন।
২০১৩ সাল থেকে সরকারিভাবে (জি টু জি পদ্ধতিতে) প্ল্যান্টেশন সেক্টরে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠিয়ে আসছিল বাংলাদেশ সরকার, যাতে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।
বিএমইটির মহাপরিচালক সামছুন নাহার মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আমাদের দেশের সরকারের কথা চলছে। সেক্ষেত্রে যে প্রসেসে তারা অন্য ক্ষেত্রগুলোতে ভিসা দিচ্ছে হয়ত আমাদের এমওইউ (চুক্তি) সংস্কার করে সেভাবে একটা বিষয় হতে পারে।”
বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
মালয়েশিয়ায় সরকার শুরুতে শুধু সরকারিভাবেই শ্রমিক নিতে চেয়েছিল, সেজন্য বনায়ন (প্ল্যান্টেশন) খাতে গত দুই বছর ধরে সেভাবেই শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল।
“এর মধ্যে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অন্যান্য সেক্টরে কিছু ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে,” বলেন সামছুন নাহার।
ইস্যু করা ভিসাগুলো যাচাই-বাছাই করে শ্রমিকদের বহির্গমন ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিএমইটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “জি টু জি পদ্ধতির বাইরে প্রায় ২০ হাজার এমপ্লয়মেন্ট ভিসা ইতোমধ্যে ইস্যু করেছে মালয়েশিয়া সরকার। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত বিএমইটি যাচাই-বাছাই করে ছাড়পত্র দিয়েছে চারশটিকে।”
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের একটি পরিত্যক্ত আস্তানায় গণকবর পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাগর পথে মানবপাচারের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য।
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারিভাবে সুযোগ কমে যাওয়ার কারণেই অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
বায়রা সভাপতি বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের একটি বৈঠক হয়েছে, সেখানে তিনি আমাদের দ্রুততার সঙ্গে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।”
কোন সেক্টরে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কথা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা তিনি উল্লেখ করেননি। সরকারিভাবে এতদিন শুধু প্ল্যান্টেশন সেক্টরে শ্রমিক পাঠানো হত। এটা ছাড়াও ফ্যাক্টরি, সার্ভিস, কন্সট্রাকশন ও এগ্রিকালচার সেক্টরে বাংলাদেশিদের চাহিদা আছে।”
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যুক্ত হলে প্রতি বছর মালয়েশিয়ায় অন্তত দেড় লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আশাবাদী বায়রা সভাপতি।
“আর এটি হলে শুধু যে মানব পাচার বন্ধ হবে এমন নয়, বরং প্রচুর কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।”
২০১৩ সালে শুরু হওয়া জি টু জি পদ্ধতিতে সরকার শুরু থেকেই আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। প্রতি ছয় মাসে ৫০ হাজার শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হলেও বিএমইটির হিসেবে গত দুই বছরে পাঠানো হয়েছে মাত্র সাত হাজার।
Discussion about this post