উইকেট নিয়ে গতকাল কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের মন্তব্য বেশ বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল। আজ আরেক দফা বিস্মিত হতে হলো বাংলাদেশ দলের সমন্বয় নিয়ে। এমন একাদশে গঠনে সকাল থেকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট, বিশেষ করে কোচ হাথুরুকে।
প্রতিপক্ষ যেখানে তিন পেসার নিয়ে খেলছে, বাংলাদেশ দলে কেন এক পেসার? কেন স্কোয়াডে থাকা রুবেল হোসেনকে একাদশে রাখা হলো না? সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে যে–ই আসুন না কেন, প্রশ্নটার তির তাঁর দিকে ছুটে যেতই। এবং কোচ নিজেই চলে এলেন সেই প্রশ্নের সামনা করতে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের ঝড় সামলাতে হলো। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েছেন এক বছর হলো। আজই প্রথম কোচকে যেন একটু ব্যাকফুটে দেখা গেল। গত জুনে ৫৮ রানের অলআউট লজ্জার পরও হয়তো এতটা অসহায় দেখায়নি তাঁকে।
রুবেল-প্রশ্নে যে উত্তর দিলেন, সেটাও কম বিস্ময়কর নয়! জানালেন, রুবেলকে একাদশে রাখা হয়নি শতভাগ ফিট না থাকার কারণে, ‘রুবেল চোট কাটিয়ে এসেছে, সে শতভাগ ফিট নয়।’ রুবেলকে ওয়ানডের জন্য মজুত রাখা হয়েছে জানিয়ে বললেন, ‘ভারতের শক্তির দিকগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তবে আমাদের হাতে থাকা শক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে পারি। ওয়ানডে সিরিজের জন্য রুবেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। সেখানে আমরা যদি একটি ম্যাচও জিততে পারি, তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আমাদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে। কাজেই এটিও আমাদের মাথায় রাখতে হয়েছে। তা ছাড়া এই কন্ডিশনে আরেকজন সিমার খেলিয়ে লাভ ছিল না।’
রুবেল ‘শতভাগ ফিট নন’ বা তাঁকে কেবল ওয়ানডের জন্য কেবল তাঁকে ভাবা হচ্ছে ভালো কথা। তাহলে টেস্ট স্কোয়াডে কেন রাখা হলো? কোচের এবারের উত্তর, ‘সে ফিট নেই, তা নয়। তবে সে এ ধরনের উইকেটে বল করতে শতভাগ ফিট নয়। কারণ এ ধরনের উইকেট পেতে হলে প্রচুর খাটতে হবে। একাদশে না নেওয়ার এটাও একটা কারণ।’
ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যেখানে স্পিনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেখানে দলে কেন চার স্পিনার। ‘বৈচিত্র্য’ আনার জন্যই নাকি এমন সমন্বয়! বাংলাদেশের এ বোলিং আক্রমণকে ‘সেরা’ বলেও অভিহিত করলেন কোচ। সেই ‘বৈচিত্র্যপূর্ণ’ স্পিন আক্রমণ সারা দিনে ৪২ ওভার বোলিং করে ১৮০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য।
গতকাল তিনি বলেছিলেন ‘এমন উইকেট আগে কখনো দেখিনি’। এখন কী মনে হচ্ছে? হাথুরু আগের অবস্থান থেকে খানিকটা সরেই এলেন, ‘আমার দেখা এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে ন্যাড়া উইকেট এটি, অনেকটা খুলনার মতোই। তবে প্রথম দিনেই সব কিছু বোঝা যায় না। পঞ্চম দিনে গিয়ে মনে হতে পারে, ভিন্ন ধরনের উইকেট।’
ফতুল্লা টেস্টের প্রথম দিন ‘ব্যাকফুটে’ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষা নিয়েও আছে প্রশ্ন। খেলোয়াড়দের আক্রমণাত্মক মানসিকতা এ দিন খুঁজে পাওয়া গেল কমই। তবে কোচ মনে করছেন সব ঠিকই আছে, ‘এখনো আমরা জেতার জন্যই খেলছি। শারীরিক ভাষায় ভিন্ন কিছু দেখিনি। ভুল কিছুও দেখিনি। শুধু একটাই ব্যাপার, স্কোরবোর্ডে বিনা উইকেটে ওদের ২৩৯ রান উঠে গেছে। ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমাদের দলের একটা ইনিংস শেষ হলে বুঝতে পারব, ঠিক হচ্ছে নাকি ভুল।’
প্রথম দিনেই হয়তো কোচকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ঠিক নয়। আবার এও তো সত্যি, সকালের সূর্যতেই লুকিয়ে থাকে দিনের পূর্বাভাস।”প্রথম আলো
Discussion about this post