৩ দিনের টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় বেনাপোল পোর্ট থানা হাজতখানায় হাঁটু পানি জমেছে। এতে একদিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিড়ম্বনার মধ্যে অফিস করতে হচ্ছে, অন্যদিকে পানির মধ্যে আটকা পড়ে ভোগান্তির শেষ নেই হাজতবাসীর।
শুক্রবার (১০ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি রুমে হাঁটু পানি জমে আছে। পুলিশ সদস্যরা অফিসের ফাইলপত্র বাঁচাতে হাতে হাত মিলিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পানি নিষ্কাশনের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হাজতখানায় আসামিরা কেউ হাঁটু পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ কাঠের বেঞ্চের উপর বসে সময় পার করছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শার্শা উপজেলাধীন দুটি থানা রয়েছে। এর একটি হচ্ছে শার্শা থানা, আর অপরটি হচ্ছে বেনাপোল পোর্ট থানা। অনেক আগেই শার্শা থানা স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্যের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল বেনাপোল স্থলবন্দর অফিসের পাশে বন্দরের পুরনো একটি পরিত্যক্ত ভবনে অস্থায়ীভাবে উদ্বোধন করেন পোর্ট থানার কার্যক্রম। সেই থেকে আজও পর্যন্ত ওই জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পোর্ট থানার কার্যক্রম।
ভবনের মধ্যে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের অধিকাংশ স্থানে ফাটল ধরেছে। ছাদের ঢালাই খসে পড়ে রড বেরিয়ে এসেছে। জায়গার অভাবে অস্ত্রাগারের মধ্যেই কোনরকমে একটি গেট তৈরি করে রাখা হচ্ছে আসামিদের। হাজতখানায় জায়গার অভাবে এক জনের গায়ের উপর অন্য জন শুয়ে বসে সময় পার করছেন। আবার অনেক আসামিকে বাধ্য হয়ে থানার বারান্দা ও অফিস রুমে বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বাংলানিউজকে বলেন, পোর্ট থানার ভবনটি ব্যবহারের একেবারে অনুপোযোগী হলেও নিরুপায় হয়ে ঝুঁকির মধ্যে তা আমাদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে অফিসিয়াল কার্যক্রম চালাতে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, বন্দর নগরী হওয়ায় এখানে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের বসবাস। বিপুল রাজস্ব আদায়ের কারণে এখন বেনাপোল প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। কিন্তু এখানে তুলনামুলক সেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়নি। প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন থাকলেও সেগুলো পরিষ্কার না করায় ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অজপাড়াগাঁয়ের মত বন্দরনগরী এলাকার রাস্তাঘাটে জলবদ্ধতা থাকে। এসময় মানুষ ঘর হতে বের হতে পারে না। এসব সমস্যা বিভিন্ন সময় পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাদের উন্নয়ন কাজ ধীর গতিতে চলায় সমস্যা বেড়েই চলেছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পৌর সচিব রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দির্ঘ মেয়াদী মাস্টার প্ল্যান করে পৌরসভার উন্নয়ন কাজ চলছে। এতে এখন সাময়িক সমস্যা হলেও খুব দ্রুত উন্নয়নমূলক কাজের সুফল পৌরবাসী ভোগ করবে।



Discussion about this post