প্রধান আসামির নাম না থাকায় চাঞ্চল্যকর কোকেন আমদানির ঘটনার দায়ের হওয়া মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেননি আদালত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কমকর্তাকে দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাবকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান বাংলানিউজকে বলেন, মামলার এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছিল নূর মোহাম্মদ নামে একজনকে। কিন্তু তদন্তের পর দাখিল করা অভিযোগপত্রে তার নাম বাদ দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ওই অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে আদালতের কাছে তদন্তে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। এজন্য র্যাবকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য বলেছেন আদালত।
তবে এজলাসে দেয়া আদেশে অধিকতর তদন্তের জন্য কোন সময় বেঁধে দেয়া হয়নি বলে জানান মিনান।
গত ১৯ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (উত্তর) মো.কামরুজ্জামান চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জনের সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত দু’জনসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়। তবে এজাহারে নাম থাকলেও কোকেনের চালানটি যে প্রতিষ্ঠানের নামে বন্দর আনা হয়েছিল খান জাহান আলী লিমিটেড নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক নূর মোহাম্মদকে অভিযোপত্রে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, লন্ডনে অবস্থানরত বকুল মিয়া ও ফজলু মিয়া, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, কসকো শিপিং লাইনের ম্যানেজার এ কে আজাদ, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদি আলম, সিএন্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এবং আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল।
এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ১৮ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বাকি আসামিরা কারাগারে আছেন।
নগর পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তরল কোকেন সন্দেহে গত ৬ জুন রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার বন্দরে সিলগালা করে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ৮ জুন এটি খুলে ১০৭টি ড্রামের প্রতিটিতে ১৮৫ কেজি করে সানফ্লাওয়ার তেল পাওয়া যায়। তেলের নমুনা প্রাথমিক পরীক্ষা করে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলে উন্নত ল্যাবে কেমিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ২৭ জুন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর জানায়, কেমিক্যাল পরীক্ষায় একটি ড্রামে তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
২৮ জুন নগরীর বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি বাদি হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ এর ১(খ) ধারায় জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সোহেলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে চোরাচালানের ধারায় আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেটি তদন্তাধীন আছে।
Discussion about this post