সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও পুলিশি অভিযানের মধ্যেই গত শুক্রবার রাতে প্রকাশিত হয়েছে তুরস্কের জনপ্রিয় জামান পত্রিকার সংস্করণ। সেখানে কড়া প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। দিনটিকে তুরস্কের গণমাধ্যমের ইতিহাসে অন্যতম ‘কালো দিন’ বলা হয়েছে।
বিবিসির খবরে জানা যায়, গত শুক্রবার মধ্যরাতে পত্রিকার কার্যালয়ে পুলিশি অভিযান শুরুর ঠিক আগেই জামান পত্রিকার এই সংস্করণ প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটির ইংরেজি সংস্করণে লেখা হয়, ‘তুরস্কের মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য দিনটি লজ্জার।’
গত শুক্রবার জামান পত্রিকাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেন আদালত। এর পর পত্রিকার কয়েক শ পাঠক-সমর্থক ইস্তাম্বুলে প্রধান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। মধ্যরাতের ঠিক আগে আগে পুলিশ তাঁদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও জলকামান প্রয়োগ করে। পুলিশ সেনা সদস্যদের কায়দায় এগিয়ে গিয়ে সরাসরি বিক্ষোভকারীদের গায়ে বরফ শীতল পানি ছোড়ে। এরপর লোহার ফটক কেটে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ভবনের ভেতরে ঢোকেন।
পুলিশের এই অভিযানের পর সংবাদকর্মীরা অনেকেই কাজ শুরু করেন। তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে অনেকেই বার্তা দেন যে তাদের ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া কঠিন হচ্ছে। অনেকে ইমেইলে ঢুকতে পারছেন না বলে জানান। আবদুল্লাহ বজতুরত নামে এক প্রতিবেদক বলেন, পত্রিকার অনলাইন আর্কাইভ নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে।
জামান পত্রিকার প্রচার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার।
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভোতগলু দেশটির এক টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এই অভিযান ছিল আইনি, রাজনৈতিক নয়।
জামান পত্রিকাটি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কঠোর সমালোচক বলে পরিচিত। পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মপ্রচারক ফেতুল্লাহ গুলেনের হিজমাত আন্দোলনের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তুরস্কে হিজমাতকে সন্ত্রাসী দল বলে মনে করে। তুরস্কের সরকার মনে করে, জামান পত্রিকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে উৎখাত করতে চায়।
জামান পত্রিকার ব্যাপারে আদালতের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
Discussion about this post