
পুরনো মামলা মুদ্রা পাচারের নতুন আইনে চালানোর বিষয়ে একটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে হল-মার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদের করা রিট আবেদন খারিজ করেছে আদালত।
বুধবার (১৬ মার্চ) তুষারের রিট আবেদনে ওই ধারা নিয়ে এর আগে দেওয়া রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেয়।
এর ফলে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারা নিয়ে তুষারের আপত্তি টিকল না। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
অন্যদিকে তুষারের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে হল-মার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনা প্রকাশ পেলে গত বছর তা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল ওঠে।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১২ সালের অগাস্টে আর্থিক খাতে বড় এই কেলেঙ্কারির ঘটনার অনুসন্ধান ও তদন্ত শুরু করে দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে ওইবছর ৪ অক্টোবরে ১১টি মামলা করা হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর হল-মার্ক গ্রুপের পরিচালক তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপক তুষারসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দদুক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল শাখা থেকে হলমার্ক মোট ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
এরপর ৩১ এর ৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করে তুষার রিট আবেদন করলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রুল জারি করে।
মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারা সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।
দুদক, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও অর্থ সচিবসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা ১১টি মামলার মধ্যে নয়টিতে তুষারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের সময়কাল ২০০৯ সাল, ঘটনাস্থলও এক। মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ এর ৩ ধারার ‘সুযোগ নিয়ে’ এসব মামলায় ২০১২ সালের আইন অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালের মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, ওই আইন হওয়ার সঙ্গে পুরনো আইন ও অধ্যাদেশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে আগের আইনে দায়ের হওয়া কোনো মামলা অনিষ্পন্ন থাকলে তার বিচার নতুন আইনেই হবে।
তুষারের আইনজীবী আদালতে যুক্তি দেন, একই বিষয়ে একই সঙ্গে নয়টি মামলা চলতে পারে না। এটা সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।”
এ বিষয়ে বিবাদীদের দেওয়া জবাব পাওয়ার পর রুলের ওপর শুনানি করে আদালত তা নিষ্পত্তি করে দিলো।




Discussion about this post