অবশেষে সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সরাসরি নির্দেশনায় চার ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের মধ্য দিয়ে এ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে শিগগিরই। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন স্বতন্ত্র চার পরিচালককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন একজন ব্যাংকার, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, একজন আমলা ও একজন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে ইসলামী ব্যাংককে জামায়াতমুক্ত করার দাবি ছিল বিভিন্ন মহলের। সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে এই ব্যাংকটিকে জাতীয়করণের প্রস্তাবও ছিল। গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠন, তরিকতপন্থী রাজনৈতিক দলেরও দাবি ছিল- ব্যাংকটিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার।
জঙ্গি অর্থায়ন ছাড়াও রাজনৈতিক সহিংসতায় অর্থায়নের অভিযোগ উঠে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে। বিষয়গুলো তদন্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আওতাধীন প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত বছরের শেষের দিকে ভেতরে ভেতরে জামায়াতপন্থিদের গোল্ডেন হ্যান্ড শেকের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। রদবদল করা হয় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ছাড়াও বাকি শীর্ষপদে। বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ বলে খ্যাত এস আলমসহ সরকারের অনুগত ব্যবসায়িদের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তরেরও গুঞ্জন উঠে। একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিষয়েও সরকার তৎপর হয়। গত বছরের শুরুতে জাপা নেতা গোলাম মসিহ্ সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ইসলামী ব্যাংকের সৌদি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়টি সৌদি বিনিয়োগকারীদের জানালে, তারা সরকারের নীতির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন বলেও প্রচার রয়েছে।
সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আওতাধীন প্রভাবশালী ওই গোয়েন্দা সংস্থাটির খোঁজখবরের পরই চূড়ান্তভাবে পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালের নাম রয়েছে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে সামীম মোহাম্মদ আফজালের সঙ্গে বুধবার বিকেলে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমিও বাই দ্য বাই শুনেছি। আমি এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনও কাগজপত্র পাইনি। আপনি ব্যাংকের যারা মুখপাত্র তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’




Discussion about this post