সুপ্রিম কোর্টের জারি করা আদেশ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা প্রদান করার জন্য সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক আয়োজিত সভা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, সম্মেলন ইত্যাদি সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কোনরূপ অসহযোগিতা বা শর্ত ও বিধি-নিষেধ আরোপ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের অন্যতম বিচার বিভাগ। সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদে দেশের নিম্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর হাইকোর্ট বিভাগের নিরংকুশ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। যার মধ্যে আবশ্যিকভাবে সকল প্রকার প্রশাসনিক, আর্থিক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক আয়োজিত সকল সভা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, সম্মেলন ইত্যাদি সরকারি অনুষ্ঠান হিসাবে গণ্য। তাই এরূপ অনুষ্ঠানে আগত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাগণের টিএ/ডিএ বিল উপস্থাপনে বা সরকারি গাড়ি ব্যবহারে যে কোনরূপ বিধি-নিষেধ আরোপ অনাকাঙ্খিত ও অগ্রণযোগ্য। সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক আয়োজিত সভা-সেমিনার ও কর্মশালায় বিচারক ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সরকারি গাড়ি ব্যবহার এবং টি,এ-ডি,এ বিল উপস্থাপনের ব্যাপারে বিধি-নিষেধ আরোপ করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালায়। গত ১১ এপ্রিল জারিকৃত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জুডিশিয়াল সার্ভিসের কোন কোন সদস্য সরকারের অনুমতি ব্যতীত রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য তাদের নিজ নিজ জেলার বাইরে গাড়ি ব্যবহার করছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পর্যায়ে পড়বে।
এমতাবস্থায় বিভিন্ন আদালত, ট্রাইব্যুনাল, দপ্তর-এর সরকারি গাড়ির অননুমোদিত ব্যবহার পরিহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো। অপর এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে কিছু কিছু দপ্তর থেকে টেবিল বহির্ভূতভাবে মঞ্জুরি আদেশ প্রদান করা হচ্ছে। উক্ত মঞ্জুরি আদেশের অনুকূলে বিলও দাখিল করা হচ্ছে। যা আইন ও বিধি সম্মত নয়। সার্বিক অবস্থায় আইন ও বিচার বিভাগের অনুকূলে মঞ্জুরিকৃত অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে বাজেটে প্রদত্ত আর্থিক ক্ষমতা বন্টনের টেবিল অনুযায়ী আইন ও বিচার বিভাগের অনুমতি ছাড়া উপস্থপিত বিল প্রদান করা হলে তার দায়িত্ব এ বিভাগ বহন করবে না।
মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা এক নির্দেশনা জারি করেন। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বিচার বিভাগ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টসহ অধস্তন আদালতসূমহ ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ই-জুডিশিয়ারি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এ টু আই শীর্ষক প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পের বিচার বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আরো একাধিক কারিগরি/উন্নয়ন প্রকল্প প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
Discussion about this post