রাজধানীর হাজারীবাগের ১৫৪ ট্যানারিকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা প্রদানে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল করবেন ট্যানারি মালিকরা।
হাই কোর্টের দেয়া জরিমানার আদায়ের আদেশ এবং এর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে শনিবার এক জরুরী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)।
বৈঠকে বিটিএর সভাপতি শাহীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সম্পর্কে সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই রায়ের কপি এখনো আমরা পাইনি। কপি পেলে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে আপিল করবো। কারণ, কোনো ট্যানারির মালিকের পক্ষেই প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে যেতে প্রস্তুত আছি। আমরা সাভারের ট্যানারি শিল্পএলাকায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু যে দূষণের কারণে আমরা সাভারে যাচ্ছি, সেখানে যেন এ পরিস্থিতি না হয় তাই কেন্দ্রীয় বর্জশোধনাগার (সিইটিপি) পুরোপুরি স্থাপন হলেই আমরা যাবো।
সরকার ধীর গতিতে চামড়া শিল্পনগরীর কাজ করছে অভিযোগ করে সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, এখনো সরকারে সিইটিপি স্থাপনের কাজ শেষ হয়নি। বর্জ্য সরানোর মতো জায়গা নেই। এছাড়াও এখনো গ্যাস, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়নি। পুরোপুরি ট্যানারি স্থানান্তরের মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় আমরা কীভাবে ট্যানারিগুলো সাভারে নিয়ে যাবো?
তিনি বলেন, আমরা কোটি কোটি টাকা চামড়া শিল্পনগরীতে বিনিয়োগ করেছি। কারখানা স্থাপনে বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। হাজারীবাগ থেকে অনেক মেশিনও স্থানান্তর করা হচ্ছে। কিন্তু সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে সরকার তার নির্ধারিত কাজ শেষ না করেই বারবার আল্টিমেটাম দিচ্ছে। এর পর আবার আদালতের এমন নির্দেশনা। এতে সমস্যায় পড়বে ট্যানারি শিল্প। আদালত যেন এসব বিষয় বিবেচনা করে সেই জন্যই আমরা আপিল করবো।
এর আগে বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা এক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা ১৫৪টি ট্যানারি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ মোহম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি একেএম শাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের এ আদেশ মনিটরিং করে ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কারণে ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশে প্রতিদিন কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তার নির্ধারণ করে আগামী ১৭ জুলাই আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য শিল্পসচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, পরিবেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তার হিসাব দেয়ার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বলা হয়েছে।




Discussion about this post