মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক বলেছেন, ‘এতদিন প্রচার ছিল মাদ্রাসার ছাত্ররা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাদের সঙ্গে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বাবারা কালো টাকা উপার্জনের ধান্দায় পরিবারকে সময় দিতে পারে না, তাদের ছেলেরাই এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।’
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত জঙ্গিবাদবিরোধী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মুক্তি সংঘ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা লীগ যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেন।
মোজ্জামেল হক বলেন, ‘বাবা-মা যখন ঘুষের ধান্দায় থাকেন বা কালো টাকা উপার্জনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন তারা পরিবারকে ততটা সময় দিতে পারেন না। এসব উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেরা সেই ছোটবেলা থেকে একাকিত্বে ভোগে, তারা সেই অর্থে কোনো আদর-যত্ন পায় না। বড় হয়ে সেসব বিষণ্নতার কারণে তারা বিভিন্ন রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের বাবা-মা জানেনই না, কখন তারা উধাও হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘এসব কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আমাদের গ্রাম নিয়ে সেরকম সমস্যা নাই। যত সমস্যা শহরের পরিবারগুলোকে নিয়ে। আমরা সামাজিকভাবে এতটাই বিচ্ছিন্ন যে, এক ফ্ল্যাটের মানুষ তার নিচতলার কারও খবর জানে না। যে কারণে জঙ্গি সহজেই সব জায়গায় আস্তানা গাড়তে পারছে। এ জন্য আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে, পাড়া-মহল্লায় কোথায় কী হচ্ছে। আর বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে তার ছেলেটি কী করছে।’
তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি জামায়াত ছেড়ে আসুন, আপনার সঙ্গে ঐক্য গড়া হবে। কেন না এসব হামলার পেছনে আছে জামায়াত-শিবিরের উত্তরসূরিরাই। তাদের ব্যাংক, বিমা ও হাসপাতালগুলোই মূলত এসব অর্থের যোগান দিচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এসব আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। ইসলামকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ইসলামের নাম ভাঙিয়ে এসব করা হচ্ছে। কোনো কিছু হলেই না কি তারাই আগে সংবাদ পান। ওটা আবার আইএসের নামে প্রচার করেন। ঘটনার পর তারাই ছুটে আসেন সাহায্য ও পারমর্শ দেয়ার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এসব সাহায্য কিংবা পরামর্শের আগে আপনাদের ঘর সামলান। সেখানে যে হামলাগুলো হয়, সেগুলো আগে নিয়ন্ত্রণ করে দেখান।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উৎসব ভাতার ঘোষণা দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার থেকে দুই ঈদে মুক্তিযোদ্ধাদের দশ হাজার করে বিশ হাজার টাকা উৎসব ভাতা হিসেবে দেয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমদ, সাবেক বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।




Discussion about this post