রাষ্ট্রপতিকে কটূক্তির অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কার্যক্রম নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত না করে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত।
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে করা মামলায় এর আগে গত ৭ আগস্ট এক মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের শুনানিতে গতকাল বুধবার (১০ আগস্ট) আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারের চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি তালিকা (কজলিস্ট) থেকে বাদ দিয়েছেন।
এদিন আদালতের শুনানিতে ফজলুর রহমানের পক্ষে ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন মো. মাসুদ রানা।
পরে আইনজীবী এম. মাসুদ রানা গণমাধ্যমকে বলেন, ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মামলাটি করা হয়নি। তাছাড়া তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা রাষ্ট্রদ্রোহের আওতায়ও পড়ে না। তাই আমরা মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করলে হাইকোর্ট তার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন নিয়ে চেম্বারে কোর্টে গেলে তা কজলিস্ট থেকে বাদ দিয়ে সিপি ফাইল করার জন্য বলেন আদালত।
গত ৭ আগস্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকের্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ওই দিন একইসঙ্গে এই মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সরকারের প্রতি রুলও জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
ফজলুর রহমান বিএনপির নবঘোষিত কমিটিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। এছাড়া তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি। ছাত্র জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। প্রথম জীবনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও পরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ কিশোরগঞ্জের ইটনায় উপজেলা নির্বাচনের সময় এক জনসভায় বক্তব্যে ফজলুর রহমান বলেন, আবদুল হামিদ খন্দকার মোশতাকের দল করতো। তিনি এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। খন্দকার মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন।
এই বক্তব্যের পর ওইদিনই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেই মামলায় ২০১৪ সালের ২১ জুন নিম্ন আদালত থেকে তদন্তের অনুমতি দেয়া হয়। একই বছরের ১৪ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে আমলে নেয় আদালত।
এই মামলায় চলতি বছর ১৩ জুলাই কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। দুই সপ্তাহ আগে এই মামলা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ফজলুর রহমান। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ আদালত এই আদেশ দেন।




Discussion about this post