মানবতাবিরোধী অপরাধের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি যে কোনও সময় কার্যকর করা হবে। আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মীর কাসেমের পরিবারকে ডেকেছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন মীর কাসেমের দুই মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম। বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাস দুটি তুলে দেওয়া হলো:
সুমাইয়া রাবেয়া লিখেছেন:
‘আমার আব্বু নরম মনের মানুষ। প্রতিবার বক্তব্য দিতে উঠলে কেঁদে ফেলতেন। এটা সবাই জানেন। এর আগে যখন দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর চেহারায় বিন্দুমাত্র বিচলতা দেখিনি, বরং সবার সাথে হাসি খুশি ছিলেন। তখন বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আব্বু, আমাদের ভাইবোনের জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাতের সুপারিশ করবানা? আব্বু একগাল হেসে বললেন, শুধু তোমরা না, আমার নাতি-নাতনী, বউমা, জামাই সবার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করব। আমরা সবাই হেসে দিয়েছিলাম। আজকে আবার আব্বুকে দেখতে যাচ্ছি। শেষবারের মতো। কাল আব্বু থাকবে না এ নিয়ে আমরা দুঃখিত নই। শাহাদাতের মর্যাদা কজনের ভাগ্যে জোটে? এ মৃত্যুর জন্যই তো সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আল্লাহ আমার আব্বুকে কবুল করে নিন।’
তাহেরা তাসনিম লিখেছেন:
‘সবাই আমার বাবা মীর কাসেম আলীর জন্য দোয়া করবেন যেন তিনি জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হতে পারেন! আর আমাদের, তার পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দেন এবং এ দেশ ও জাতিকে তার চলে যাওয়াতে অর্থনীতি ও দেশসেবায় যে অপূরণীয় ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে ওঠার তৌফিক দিন। আমিন। এমকিউ আলী পরিবার!’
প্রসঙ্গত: ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আলবদর নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ আটজনকে হত্যার দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগের রায়েও তার এ শাস্তি বহাল থাকে। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেওয়া হলেও গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তিনি প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না এটা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপরই তার ফাঁসি কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post