বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী কমোডর (অব.) গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে এই রায়ে ২০১৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তিন আসামিকে যাবজ্জীবন এবং এক আসামিকে খালাস দিয়েছিলেন।
২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রোসেসিং জোনের (কেইপিজেড) তখনকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী কমোডর (অব.) গোলাম রব্বানী। ঢাকার পর ব্যাংককে ১৩ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় তারা।
হামলার ঘটনার পর কেইপিজেডের সাবেক প্রকৌশলী একেএম এমতাজুল ইসলাম চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। গোলাম রব্বানীর মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
এ মামলায় ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামি মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আব্দুল মালেক সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে দেওয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড। এছাড়া সাইফুল ইসলামকে খালাস দেন আদালত।
রায়ের পর দণ্ডিতরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তবে আসামিদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করেন।
হাইকোর্টে শুনানি শেষে কেইপিজেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীর সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ সেলিমের আপিল খারিজ করে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। এছাড়া আবদুল মালেক সোহেলের আপিল গ্রহণ করে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
আর নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া সাইফুল ইসলামের বিষয়টি পুনরায় রায়ের জন্য বিচারিক আদালতে পাঠিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর আগে হাইকোর্টে আবেদনের পর ২০০৮ সালে হাশেমকে হাইকোর্ট দণ্ড থেকে খালাস দেন।
হাইকোর্টের রায় পাওয়ার পর আট সপ্তাহের মধ্যে হুমায়ুন কবির, আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে নিজ নিজ দণ্ড ভোগ করার নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে সাইফুলকেও আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন আদালত।
বঙ্গবন্ধুর এডিসি (an aide-de-camp) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নৌ-বাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌ-পরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকও ছিলেন।
Discussion about this post