স্ত্রী হত্যায় জড়িত থাকার সরাসরি প্রমাণ পেলে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে নগর পুলিশের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুলিশ সমাবেশে এসে আইজিপি সাংবাদিকদের একথা জানান।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইজিপি বলেন, বাবুল আক্তারকে গ্রেফতারের মতো এখনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সরাসরি কোন প্রমাণ পাওয়া পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
প্রশ্নের জবাবে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, গ্রেফতার করা হবে। অবশ্যই তাকে (বাবুল আক্তার) গ্রেফতার করা হবে।
মুছাকে গ্রেফতার করা গেলে স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের ভূমিকা পরিস্কার হত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চারজনের জবানবন্দিতে মুছার নাম এসেছে। মুছা বাবুল আক্তারের সোর্স ছিল। মুছা কেন এবং কার নির্দেশে এই হত্যাকান্ডে জড়াল সেটা জানতে তাকে গ্রেফতারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন সিএমপি কমিশনার মো.ইকবাল বাহার।
বিষয়টি উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মুছাকে এখনও খুঁজছি। তাকে ধরার জন্য পুলিশ কমিশনার পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। মুছাকে ধরতে পারলে অনেক রহস্য উদঘাটন হবে। তখন বাবুল আক্তারের ভূমিকাটা পরিস্কার হবে।
‘মুছাকে একটা নির্দিষ্ট টাইম পর্যন্ত গ্রেফতারের চেষ্টা করব। না পাওয়া গেলে মুছাকে বাদ দিয়ে, মুছাকে অনুপস্থিত দেখিয়ে চার্জশিট দিয়ে দেব। ’ বলেন আইজিপি
এস আই আকরাম হত্যার ঘটনায় বাবুলকে দায়ী করার বিষয়ে জানতে চাইলে এসপি বলেন, এরকম কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। গণমাধ্যমে এসেছে। যদি অভিযোগ সত্য হয়, তখন বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্প্রতি এস আই আকরামের পাঁচ বোন সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, আকরামের স্ত্রী বর্নির সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় আকরামকে খুন করা হয়। তবে বর্ণি মাগুরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, বাবুল আক্তারকে তিনি কখনও দেখেননি।
এর আগে গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন সদর দপ্তরে কর্মরত তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকান্ডের পর ২৪ জুন রাতে বাবুল আক্তারকে রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মামলার বাদিকে আসামির মতো তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে দেশজুড়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে ইঙ্গিত করে খবর প্রকাশ হয়।
সিএমপির গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হয়েছিলেন বাবুল আক্তার। হত্যাকান্ডের আগের দিন তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ সুপার পদে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। স্ত্রী হত্যার পর বাবুল আক্তার ঘটনা পরিক্রমায় চাকরিতে ইস্তফা দেন। বর্তমানে তিনি একটি হাসপাতালে যোগ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
Discussion about this post